
চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দ বেশিদিন স্থায়ী হয় না—বিশেষ করে যদি সেটা হয় আইপিএলের মতো নাটকীয় প্রতিযোগিতা। এবারের আসরেই সেই প্রমাণ দিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। গত মৌসুমে একচেটিয়া আধিপত্য দেখিয়ে ফাইনালে উড়িয়ে দিয়েছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে। কিন্তু এবার? বৃষ্টিতে পণ্ড হওয়া ম্যাচে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে তাদের বিদায়ঘণ্টা বেজে গেল আগেভাগেই।
বেঙ্গালুরু–কলকাতা ম্যাচটি পরিত্যক্ত হওয়ায় প্লে-অফে ওঠার দৌড়ে টিকে গেল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। বিপরীতে, কলকাতার আইপিএল ২০২৫ অভিযানের পরিসমাপ্তি হলো লিগ পর্বেই। এই নিয়ে টুর্নামেন্টে দ্বিতীয়বার পরিত্যক্ত ম্যাচের শিকার হলো কলকাতা, আর দুটিই তাদের জন্য হয়ে দাঁড়াল ‘কালো দিন’।
তবে, এমন পতন কেবল কলকাতার ভাগ্যেই নয়। আইপিএলের ইতিহাস ঘাঁটলেই দেখা যায়, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ঠিক পরের বছরেই বহু দল মুখ থুবড়ে পড়েছে। কলকাতার ইতিহাসও বলছে সেই কথা। ২০১২ সালে গৌতম গম্ভীরের নেতৃত্বে প্রথমবার শিরোপা জেতার পর ২০১৩ সালে তারা উঠতে পারেনি প্লে-অফে। একই কাহিনি ২০১৪ ও ২০১৫ মৌসুমে। আর এবার, ২০২৪-এর শিরোপা জয় করে ২০২৫-এ গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে পড়ল শ্রেয়াস আইয়ারের দল।
এই তালিকায় আরও ভয়াবহ উদাহরণ রয়েছে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন দলটি তিনবার শিরোপা জেতার পরের মৌসুমে বিদায় নিয়েছে লিগ পর্ব থেকেই—২০১৬, ২০১৮ ও ২০২১ সালে। চেন্নাই সুপার কিংসও দুটি মৌসুমে (২০২2 ও ২০২৪) একই পরিণতির শিকার। এমনকি রাজস্থান রয়্যালস, যারা প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন, তারাও পরের মৌসুমেই হয়ে পড়ে ছিটকে।
নিচের পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট, আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ঠিক পরের বছর যেন অদৃশ্য এক অভিশাপ নেমে আসে শিরোপাধারীদের ওপর:
দল | চ্যাম্পিয়ন হওয়ার বছর | পরের মৌসুমে পারফরম্যান্স |
---|---|---|
রাজস্থান রয়্যালস | ২০০৮ | ১৪ ম্যাচে ৬ জয়, ষষ্ঠ |
কলকাতা নাইট রাইডার্স | ২০১২ | ১৬ ম্যাচে ৬ জয়, সপ্তম |
কলকাতা নাইট রাইডার্স | ২০১৪ | ১৪ ম্যাচে ৭ জয়, পঞ্চম |
মুম্বাই ইন্ডিয়ানস | ২০১৫ | ১৪ ম্যাচে ৭ জয়, পঞ্চম |
মুম্বাই ইন্ডিয়ানস | ২০১৭ | ১৪ ম্যাচে ৬ জয়, পঞ্চম |
মুম্বাই ইন্ডিয়ানস | ২০২০ | ১৪ ম্যাচে ৭ জয়, সপ্তম |
চেন্নাই সুপার কিংস | ২০২১ | ১৪ ম্যাচে ৪ জয়, নবম |
চেন্নাই সুপার কিংস | ২০২৩ | ১৪ ম্যাচে ৭ জয়, পঞ্চম |
কলকাতা নাইট রাইডার্স | ২০২৪ | গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় |