
আইপিএল যেন এখন এক নামেই ঝড় তুলে দিয়েছে—বৈভব সূর্যবংশী। বয়স মাত্র ১৪ বলে দাবি, কিন্তু তার ব্যাটিংয়ের গতি ও গ্ল্যামার দেখে অনেকেই চোখ কপালে তুলেছেন। ৩৫ বলে সেঞ্চুরি করে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে ক্রিকেট–বিশ্ব কাঁপিয়ে দিয়েছে এই কিশোর। ১১টি ছয় ও ৭টি চারে এই বিস্ময় ইনিংস খেলার পর পুরো ভারত তো বটেই, বৈশ্বিক ক্রিকেট মহলেও চলছে ‘বৈভব–বন্দনা’।
বিহারের সমস্তিপুরের ছেলে বৈভবের ক্রিকেট–যাত্রা শুরু বাবার অনুপ্রেরণায়। কৃষিকাজ করা সঞ্জীব সূর্যবংশী নিজে ক্রিকেটার হতে না পারলেও, ছেলেকে ক্রিকেটার বানানোর স্বপ্নে জীবনের সব কিছু নিংড়ে দিয়েছেন। স্থানীয় একাডেমি থেকে রাজ্যের হয়ে খেলেছেন, তারপর ভারতের অনূর্ধ্ব–১৯ দলের হয়েও নিজের জাত চিনিয়েছেন বৈভব। মাত্র ১৩ বছর বয়সেই করেছেন যুব টেস্টে ৫৮ বলে সেঞ্চুরি।
আইপিএল নিলামে ৩০ লাখ ভিত্তিমূল্য থেকে বেড়ে ১ কোটি ১০ লাখ রুপিতে তাকে কিনে নেয় রাজস্থান। প্রথম কয়েক ম্যাচেই সুযোগ পেলেও যে এভাবে বাজিমাত করবে, তা অনেকেই ভাবেননি। তিন নম্বর ম্যাচেই ঝড় তুলল—মাত্র ৩৫ বলে শতরান! কোচ মনীশ ওঝা বলেন, এই সাফল্য বৈভবের ত্যাগ আর নিয়ন্ত্রিত জীবনের ফসল। প্রিয় খাবার মাটন-পিৎজা থেকে শুরু করে দৌড়ে যাওয়া দূরবর্তী কোচিংয়ের প্রতিটি অধ্যায় ছিল একেকটা সংগ্রাম।
তার আদর্শ? শচীন বা কোহলি নন, বরং ব্রায়ান লারা। সেই লারাও মুগ্ধ, ইনস্টাগ্রামে বৈভবের ভিডিও পোস্ট করে বললেন, "তুমি আমার মন ভরিয়েছ!"
তবে এই বিস্ময় কিশোরকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বয়স বিতর্ক। সরকারি সনদ অনুযায়ী জন্ম ২০১১ সালের ২৭ মার্চ, কিন্তু নিজে এক সাক্ষাৎকারে বলেছে বয়স ১৪। এ নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও বাবা সঞ্জীব বলছেন, “প্রয়োজনে আবারও হাড়ের পরীক্ষা করাতে রাজি।”
এদিকে স্কুলও ছাড়েনি বৈভব। তাজপুরের একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। যদিও আইপিএলের ব্যস্ততায় এখন কিছুটা বিরতি চলছে পড়াশোনায়।
বৈভব এখন শুধু খেলছে না, উপার্জনও করছে রীতিমতো সুপারস্টারের মতো—প্রতি মৌসুমে ১ কোটি ১০ লাখ রুপি, সঙ্গে ম্যাচ ফি, সরকারি পুরস্কার এবং শোনা যাচ্ছে, রাজস্থান রয়্যালসের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে মিলেছে মার্সিডিজ বেঞ্জ!