
ভূমি ও কৃষি অফিসে নতুন করে ‘সুপারিশওয়ালা’ তৈরির অভিযোগ তুলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, “আগে ভূমি ও কৃষি অফিসে সরকারি দলের লোকের সুপারিশ বা ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হতো না। মানুষ ভেবেছিল পরিবর্তন আসবে—সুপারিশ ছাড়াই ন্যায্য দাবি মিটবে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, নতুন সুপারিশওয়ালারা জন্ম নিয়েছে, নতুনভাবে লেনদেনের সংস্কৃতি গড়ে উঠছে। এটি গণ–অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।”
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘ভূমিহীন কৃষক সমাবেশে’ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এই সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলন ও রাষ্ট্রসংস্কার কৃষক আন্দোলন।
জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, “২৪-এর গণ–অভ্যুত্থানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ রক্ত দিয়েছেন, জীবন দিয়েছেন। ফ্যাসিস্ট শাসনকে বিদায় দিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সেই যাত্রায় ভূমিহীন, কৃষক, শ্রমজীবী মানুষরা আদৌ আছে কি?”
ভূমি সংস্কারকে বাস্তব পরিবর্তনের পূর্বশর্ত হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ভূমি কমিশন বা শিক্ষা কমিশন হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত ভূমিহীনদের অধিকার নিশ্চিত করা। নির্বাচন, সংস্কার আর ন্যায়বিচার—এই তিনটি একসঙ্গে চালাতে হবে। জনগণের সঙ্গে নিয়েই করতে হবে এই কাজ।”
তিনি দাবি করেন, একটি নির্বাচিত সরকার অনেক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে ক্ষমতায় আসে, যা ভূমি সংস্কারের মতো বড় কাজ করার সুযোগ দেয় না। বরং অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আসা সরকারের পক্ষেই এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সম্ভব। কিন্তু এই সরকার সে পথে হাঁটছে না। বরং ভূমি অফিসে আবারও ছাত্রদের সুপারিশ চাওয়া, নতুনভাবে দুর্নীতির সংস্কৃতি চালু হওয়া প্রমাণ করে, বিশেষ একটি দলের শাসন প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু এবং জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের ঢাকা জেলা কমিটির সভাপতি লিটন কবিরাজ, সঞ্চালনা করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছামিউল আলম।