ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে তাঁকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। এর আগে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার বেলা ৩টার দিকে ওসমান হাদির মরদেহবাহী কফিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছায়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশেই জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করা হয়। জাতীয় কবির সমাধির পাশে সমাহিত হওয়ার মধ্য দিয়ে ইতিহাসের এক আবেগঘন অধ্যায়ের সাক্ষী হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা।
এর আগে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ওসমান হাদির প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন তাঁর বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক। সকাল থেকেই জানাজায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছাত্র-জনতা ও সাধারণ মানুষ দক্ষিণ প্লাজায় জড়ো হতে থাকেন।
নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আর্চওয়ে গেট পার হয়ে লাখো মানুষ সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় প্রবেশ করেন। বেলা ২টার আগেই ওসমান হাদির মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স সেখানে পৌঁছায়। কিছুক্ষণ পর সেখানে উপস্থিত হন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
জানাজায় আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া মো. গোলাম পরওয়ার, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এবং এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব জাবের এবং ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
জানাজাকে ঘিরে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, সংসদ ভবনের দক্ষিণ অংশের দুটি মাঠ ও আশপাশের এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। শোকাহত মানুষের ঢল নামে শেষবারের মতো প্রিয় নেতাকে বিদায় জানাতে।
উল্লেখ্য, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন ওসমান হাদি। প্রথমে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরদিন তাঁর মরদেহ দেশে আনা হয় এবং জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়। শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুতে আজ রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।
























