
বিশ্বজুড়ে চাকরিজীবীদের একটা বড় অংশই মনে করেন, তাঁদের কর্মপরিবেশ ‘টক্সিক’ বা বিষাক্ত। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। অনেকে উপায় না দেখে টিকে থাকেন এমন কর্মস্থলে, আবার কেউ কেউ ঠিক বুঝে ওঠার আগেই এমন পরিবেশে ঢুকে পড়েন।
নতুন চাকরিতে যোগ দেওয়ার আগে তাই কিছু সংকেত দেখে নেওয়া জরুরি। বিশেষ করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও ইন্টারভিউ পর্বে কিছু নির্দিষ্ট বাক্য যদি চোখে পড়ে বা কানে আসে, তাহলে সাবধান হওয়া ভালো।
১. “আমাদের কর্মীরা ছোট ছোট দলে কাজ করে”— ছোট দলে কাজ মানেই আপনি হয়তো একা অনেক দায়িত্ব কাঁধে তুলতে যাচ্ছেন। কম জনবল মানে কাজের চাপ বেশি, বেতন তুলনায় কম।
২. “প্রতিযোগিতামূলক বেতন ও পদোন্নতির সুযোগ”— বাস্তবে এর মানে হতে পারে বেতনের বিষয়টি অস্পষ্ট রেখে বেশি কাজ করিয়ে নেওয়া। সময়মতো পদোন্নতি তো নয়ই, বরং নতুন কাউকে এনে আপনাকেই তার প্রশিক্ষণ দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।
৩. “আমরা কঠোর পরিশ্রমের পাশাপাশি আনন্দও করি”— শোনার মতো ভালো, কিন্তু বাস্তবে হতে পারে অতিরিক্ত সময় কাজ করিয়ে ছুটির দিনে ‘হ্যাপি আওয়ার’ বা পার্টিতে জোর করে অংশ নিতে বাধ্য করা। বিনিময়ে হয়তো ‘ফ্রি’ খাবার, কিন্তু বাড়তি কোনো সম্মানী নয়।
-
“প্রার্থীকে দ্রুততার সঙ্গে উন্নত মানের কাজ করতে হবে”— কাজের চাপ এত বেশি থাকবে যে নিঃশ্বাস নেওয়ার সময়ও হয়তো পাবেন না। ভুল করলে চাকরি চলে যাওয়ার ভয়ও থাকবে।
-
“আমরা সবার সঙ্গে সমান আচরণ করি”— এটি অনেক সময় ‘পলিটিক্যালি কারেক্ট’ শব্দ হলেও বাস্তবতা ভিন্ন হতে পারে। সংখ্যালঘু বা ভিন্ন মতধারার কেউ সেখানে কতটা নিরাপদ থাকবেন, সেটা ভেবে দেখা উচিত।
-
“আমাদের আনলিমিটেড ছুটি আছে”— মনে হবে স্বপ্নের মতো সুবিধা, কিন্তু কাজের চাপের কারণে ছুটি নেওয়ার সুযোগই মিলবে না। ছুটির অনুমতিও নির্ভর করবে বসের সদিচ্ছার ওপর।
তবে, এসব বাক্য শুনলেই ভয় পেয়ে যাবেন না। সব প্রতিষ্ঠানই যে বিষাক্ত, তা নয়। যদি একটি বা দুটি বাক্য চোখে পড়ে, তাহলে ইন্টারভিউ পর্যন্ত যাওয়া নিরাপদ। নিজের পর্যবেক্ষণে যদি প্রতিষ্ঠানটি উপযুক্ত মনে হয়, তখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিন। কারণ একবার ঢুকে পরে আবার চাকরি বদল করাটা সহজ নয়। তাই আগেই সচেতন সিদ্ধান্ত নেওয়াই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।