
২৮ মে বিশ্ব মেন্সট্রুয়াল হাইজিন ডে। দিনটি ঘিরে বিশ্বজুড়ে তৈরি হয় সচেতনতার ঢেউ, তবে প্রশ্ন ওঠে—মাসিক নিয়ে ভাবনা কি কেবল নারীর একারই? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একদম নয়। একজন নারীর মাসিক চলাকালীন সময়ের সুরক্ষা, সম্মান ও সহযোগিতার দায়িত্ব পরিবার এবং সমাজেরও। তাই এই বিষয়টি কেবল একজন নারীর গোপন অভিজ্ঞতা নয়—এটি এক যৌথ দায়িত্ব ও বোঝাপড়ার ক্ষেত্রও।
কৈশোরে মাসিকের সূচনা নারীর জীবনে এক স্বাভাবিক পরিবর্তন। কিন্তু এই স্বাভাবিকতাটিকে সমাজ এখনও ‘চুপ থাকা’র বিষয় ভাবেই দেখে। অথচ মাসের কিছুটা সময় নারীদের জন্য হয় একটু ভিন্ন, একটু বেশি যত্নের। স্কুল-কলেজের পাঠ, কর্মজীবনের চ্যালেঞ্জ, সংসার কিংবা সন্তানের দেখভালের মাঝেও এই অস্বস্তিকর সময়টুকু সামলে এগিয়ে যেতে হয় তাঁদের। তাই মাসিক নিয়ে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন যেমন দরকার, তেমনি প্রয়োজন তথ্যভিত্তিক শিক্ষা ও বাস্তবসম্মত সমর্থন।
স্কয়ার হাসপাতালের ডা. ফারজানা রশীদ জানালেন, মাসিকের সময় পরিচ্ছন্নতা না মানলে সহজেই জীবাণু সংক্রমণ ঘটতে পারে, যার প্রভাব পড়তে পারে নারীর প্রজননক্ষমতার ওপর। তাই মাসিকের সময় স্বাস্থ্যবিধি মানা অত্যন্ত জরুরি। তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেন, “ছেলে হোক বা মেয়ে—উভয়কেই কৈশোর থেকেই মাসিক সম্পর্কে সঠিক ধারণা দিতে হবে।”
স্যানিটারি পণ্য ব্যবহারের সময় ও সতর্কতা:
-
স্যানিটারি ন্যাপকিন: সর্বোচ্চ ৬ ঘণ্টা
-
ট্যাম্পুন: ৪–৮ ঘণ্টা
-
মেন্সট্রুয়াল কাপ বা বিশেষায়িত অন্তর্বাস: ১২ ঘণ্টা (ব্যবহারের পর নিয়মিত পরিষ্কার অপরিহার্য)
স্যানিটারি পণ্য ব্যবহারের পর যথাস্থানে ফেলার নির্দেশনা মানার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর অন্তর্বাস ব্যবহার, পর্যাপ্ত পানি পান, শরীরের বিশ্রাম এবং মনের যত্নও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
সাবধানতা ও সমর্থন একসঙ্গে এগিয়ে নিতে পারে সমাজকে। মাসিককে আর গোপন নয়, বরং স্বাভাবিক জীবনের অংশ হিসেবেই দেখতে হবে। তবেই নারী তার শরীর ও মনের সঙ্গে সমঝোতা করে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যেতে পারবে। আর সেই পথে পাশে থাকতে হবে পরিবার, প্রতিষ্ঠান এবং পুরো সমাজকেও।