
তহবিল-সংকটের কারণ দেখিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে অনলাইনে পণ্য সরবরাহ (ডেলিভারি) সেবাদাতা স্টার্টআপ পেপারফ্লাই। গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের কাছ থেকে নতুন ডেলিভারি অর্ডার নিচ্ছে না। ফলে এত দিন ধরে যারা পেপারফ্লাইয়ের মাধ্যমে সেবা নিয়েছেন, তাদের অনেকেই বিপাকে পড়েছেন।
কার্যক্রম বন্ধের বিষয়ে পেপারফ্লাই জানিয়েছে, যথাসময়ে তহবিল (ফান্ড) না আসা ও সিভিসি ফাইন্যান্স কোম্পানি থেকে বেশ কিছু ফিক্সড ডিপোজিট বা স্থায়ী আমানতের টাকা ফেরত না পাওয়ায় চরমভাবে নগদ অর্থ (ক্যাশ) সংকটে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এ কারণে গত সপ্তাহ থেকে নতুন অর্ডার নেওয়া বন্ধ রেখেছে পেপারফ্লাই।
চুজ অ্যান্ড বাই নামের একটি অনলাইন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান তার গ্রাহকদের বড় ক্রয়াদেশগুলো সাধারণত পেপারফ্লাইয়ের মাধ্যমে সরবরাহ করে আসছিল। কিন্তু গত ২৪ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের যেসব পার্সেল পেপারফ্লাইকে দেয়, সেগুলো শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত সরবরাহ করা হয়নি।
এ নিয়ে চুজ অ্যান্ড বাইয়ের মালিক রিয়াদ ভূঁইয়া বলেন, ‘কোনো ধরনের পূর্বঘোষণা ছাড়াই পার্সেল নেওয়া ও সরবরাহ বন্ধ করেছে পেপারফ্লাই। এতে গ্রাহকদের কাছে আমাদের প্রতিষ্ঠান নিয়ে এখন নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে।’
শুধু এ প্রতিষ্ঠানই নয়, সারা দেশের এমন অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হঠাৎ পেপারফ্লাইয়ের কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় সমস্যায় পড়েছে বলে জানায়। পেপারফ্লাই কুরিয়ার ইউজার্স কমিউনিটি নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে গত এক সপ্তাহে ২০–এর অধিক গ্রাহক তাদের পণ্য সঠিক সময়ে সরবরাহ না হওয়ার অভিযোগ করেন। তবে পেপারফ্লাই জানিয়েছে, তারা ইতিমধ্যে গ্রাহকদের যেসব অর্ডার নিয়েছে, সেগুলো পর্যায়ক্রমে পৌঁছে দেবে।
সাড়ে সাত বছরের যাত্রা
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে যাত্রা শুরু করে পেপারফ্লাই। শুরু থেকেই প্রযুক্তিভিত্তিক স্মার্ট সরবরাহ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পেপারফ্লাই দেশের ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত নিজস্ব কর্মী দিয়ে ক্রেতার কাছে পণ্য পৌঁছে দিয়ে আসছিল।
এরই মধ্যে পেপারফ্লাইয়ের ডিজিটাল সেবা সম্প্রসারণে এগিয়ে আসে ভারতীয় লজিস্টিক সেবাদাতা ইকম এক্সপ্রেস। ২০২১ ও ২০২২ সালে পেপারফ্লাইয়ে মোট ২০২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ইকম। এর মাধ্যমে পেপারফ্লাইয়ের ৮২ শতাংশ শেয়ারের মালিক হয় ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটি।
পেপারফ্লাই সূত্রে জানা গেছে, ইকম থেকে পর্যায়ক্রমে আরও বিনিয়োগ আসার কথা ছিল। কিন্তু কয়েক মাস আগে ইকম আর বিনিয়োগ করবে না বলে জানিয়ে দেয়। এতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে পেপারফ্লাই দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী খুঁজতে থাকে। তবে আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত তারা কার্যক্রম বন্ধ করেছে।
এ বিষয়ে পেপারফ্লাইয়ের এক শীর্ষ নির্বাহী নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘আগামী এক-দেড় সপ্তাহের মধ্যে আমাদের পরিচালনা পর্ষদের সভা হবে। সেখানে আলোচনার মাধ্যমে কোম্পানির ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ঠিক করা হবে।’ সূত্র: প্রথম আলো
শেয়ার বিজনেস24.কম