ঢাকা   বুধবার ১৮ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২

ছেলের জিপিএ-৫ জালিয়াতি: চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব কারাগারে

শিক্ষা

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশিত: ২০:৪৮, ১৭ জুন ২০২৫

সর্বশেষ

ছেলের জিপিএ-৫ জালিয়াতি: চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব কারাগারে

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথকে ছেলের পরীক্ষার ফল জালিয়াতির মামলায় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) চট্টগ্রামের মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক মো. আবু বকর সিদ্দিক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে, এই মামলায় হাইকোর্ট থেকে নেওয়া চার সপ্তাহের আগাম জামিনের মেয়াদ শেষে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছিলেন তিনি।

কারাগারে পাঠানোর আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম আদালত পুলিশের পরিদর্শক শাহিনুর আলম।

তিনি বলেন, ‘পাঁচলাইশ থানার একটি জালিয়াতি মামলায় হাইকোর্ট থেকে নেওয়া আগাম জামিনের মেয়াদ শেষে শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথ আদালতে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’

২০২৩ সালে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের প্রাক্তন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথের ছেলে নক্ষত্র দেব নাথ। ওই বছরের ২৬ নভেম্বর ফল ঘোষণার পর দেখা যায়, নক্ষত্র জিপিএ-৫ পেয়েছেন, যা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন ওঠে। সে সময় নক্ষত্রের বাবা নারায়ণ চন্দ্র নাথ চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন।

অভিযোগ ওঠে, প্রভাব খাটিয়ে সন্তানকে জিপিএ-৫ পাইয়ে দিয়েছেন। এরপর ঘটনা থানা থেকে আদালত পর্যন্ত গড়ায়। পরে বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযোদ্ধা গবেষণা কেন্দ্র ট্রাস্ট চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান ডা. মাহফুজুর রহমানের অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তদন্ত স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন নারায়ণ চন্দ্র নাথ। এ বিষয়ে আট সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারি করেন আদালত। পরে মাউশি ও বোর্ডের আপিলে রিটের আদেশ বাতিল করা হয়। তদন্তে ফল জালিয়াতির বিষয়টি প্রমাণিত হলে গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বোর্ডকে নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়। একই বছরের ২৪ অক্টোবর শিক্ষা বোর্ডের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় নক্ষত্রের ফল বাতিল করা হয়।

এ ঘটনায় চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি প্রাক্তন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথ ও তাঁর ছেলে নক্ষত্র দেব নাথসহ মোট ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন চট্টগ্রামের শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক ড. একেএম সামছু উদ্দিন আজাদ।

বাকি আসামিরা হলেন—চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুস্তফা কামরুল আখতার ও প্রাক্তন সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট কিবরিয়া মাসুদ খান। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪২০, ৪৬৫, ৪৬৬, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ৩৪ ধারা এবং পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইন, ১৯৮০-এর ৫, ৬, ১২ ও ১৩ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

এর আগে, চলতি বছরের ১৫ মার্চ একই মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট কিবরিয়া মাসুদ খানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।

সর্বশেষ