
ঈদের ছুটির পর টানা দুই দিন ইতিবাচক ধারা বজায় থাকলেও সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (১৭ জুন) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কিছুটা ধস দেখা গেছে। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪৩.৯৭ পয়েন্ট কমে নেমে এসেছে ৪ হাজার ৭৩৯.৬৮ পয়েন্টে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এটি শেয়ারবাজারের স্বাভাবিক সংশোধনপর্ব, যা দীর্ঘমেয়াদী প্রবণতার একটি অস্থায়ী ধাপ।
ঈদের ছুটির পর রোববার ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট এবং সোমবার ৬০ পয়েন্ট বাড়ায় বিনিয়োগকারীদের মাঝে বড় আকারের আশাবাদ সৃষ্টি হয়। তবে আজকের পতনে অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিনিয়োগকারী হতাশ হয়েছেন। বিশ্লেষকদের ব্যাখ্যা, লাভ তুলে নেওয়ার স্বাভাবিক প্রবণতাই এ ধরনের স্বল্পমেয়াদি পতনের মূল কারণ।
বিশ্লেষকদের মতে, বড় এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বাজারের মৌলিক দিক ও দীর্ঘমেয়াদি দিকনির্দেশনার ওপর ভিত্তি করেই সিদ্ধান্ত নেন। বাজেট প্রণোদনা, বিএসইসির সংস্কারমূলক উদ্যোগ—যেমন ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ বাধ্যবাধকতা এবং ৬০টি কোম্পানির মূলধন ৩০ কোটি টাকায় উন্নীত করার পরিকল্পনা—বাজারে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বাজার চিত্র
ডিএসইতে আজ ৩৯৭টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৬৭টির, কমেছে ২৭৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৪টির। লেনদেনের পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৩১৩ কোটি ৬২ লাখ টাকায়, যেখানে গতকাল লেনদেন হয়েছিল ৪১৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকার—দিন ব্যবধানে লেনদেন কমেছে প্রায় ১০৪ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) আজ ১১ কোটি ১৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের তুলনায় কিছুটা বেশি। সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ০.৪৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ২৪৫.৭৯ পয়েন্টে। এখানে ১৮৯টি কোম্পানির মধ্যে ৭০টির দর বেড়েছে, ৯৩টির কমেছে এবং ২৬টির দর অপরিবর্তিত ছিল।
বিনিয়োগকারীদের জন্য পরামর্শ
বিশ্লেষকরা বলছেন, আজকের পতনকে বাজারের স্বাভাবিক শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়া হিসেবে দেখতে হবে। এই পরিস্থিতি নতুন বিনিয়োগের জন্য সুযোগ এনে দিতে পারে। কারণ, বাজারের মৌলিক সূচকগুলো এখনো শক্তিশালী এবং সামগ্রিক অর্থনীতি রয়েছে ইতিবাচক গতিপথে। তাই বিনিয়োগকারীদের হঠাৎ হতাশ না হয়ে ধৈর্য ধরার এবং দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের দিকেই নজর দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।