
শ্রীলঙ্কার গলে টেস্টের প্রথম দিন শেষেই স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। ৩ উইকেটে ২৯২ রানে দিন শেষ করেছে টাইগাররা। ইনিংসের হাল ধরেছেন দুই প্রান্তের দুই ভিন্ন ঘরানার ব্যাটার—অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। দুজনের অবিচ্ছিন্ন ২৪৭ রানের জুটিতে দল পেয়েছে ভরসা, ফিরেছে প্রত্যয়।
দিনের শুরুটা যতটা হতাশাজনক ছিল, শেষটা ততটাই গর্বের। প্রথম ১৭ ওভারে মাত্র ৪৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল বাংলাদেশ। এনামুল হক (০), সাদমান ইসলাম (৩১) ও মুমিনুল হক (৯) ফেরেন দ্রুত। কিন্তু এরপরই পাল্টে যায় দৃশ্যপট। উইকেটের চরিত্র বুঝে ধৈর্য্য ও মেধার মিশেলে ইনিংস গড়েন শান্ত ও মুশফিক।
গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের বাতাস, প্রাচীর, পিচ—সব কিছু মাথায় রেখে শুরুটা কঠিন হলেও পরে তা কাজে লাগান দুই ব্যাটার। দিনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেশনে একটিও উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশ তোলে যথাক্রমে ৯২ ও ১১০ রান।
নাজমুল হোসেন শান্ত ২৬০ বলে ১৩৬ রানে অপরাজিত, মেরেছেন ১৪টি চারে ও একটি ছক্কা। আর মুশফিক ১৮৬ বলে ১০৫ রানে অপরাজিত, যার মধ্যে মাত্র ৫টি চার। ধীরে, শানদার টেম্পারমেন্টে সাজানো ইনিংসটি মুশফিকের টেস্টে ১২তম সেঞ্চুরি এবং গলে তৃতীয়বার তিন অঙ্কে পৌঁছানো।
মজার বিষয় হলো, শান্ত সেঞ্চুরি করেন ২০২ বলে—মুশফিকের চেয়ে ২৬ বল বেশি খেলে, অথচ পরের ব্যাটেই এসেছে কম বাউন্ডারি। তবে দুজনের ব্যাটিংই ছিল নিখুঁত পরীক্ষামূলক টেস্ট ব্যাটিংয়ের উদাহরণ।
এই মাঠেই ২০১৩ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ৬৩৮ রানের ইনিংসের স্মৃতি ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা তৈরি করছেন এই দুজন। আজকের মতো আগামীকালও যদি এমন ছন্দে থাকেন শান্ত ও মুশফিক, তবে গলে বাংলাদেশের আরও এক ঐতিহাসিক ইনিংস দেখা যেতেই পারে।
প্রথম সেশনের বিপর্যয় ভুলিয়ে দিয়ে শেষ দুই সেশনে কেবল নাজমুল-মুশফিকের দাপটেই কেটেছে দিন। মাঠে ফিরেছে পুরোনো অভিজ্ঞতা আর নতুন সম্ভাবনার মেলবন্ধন। গলে ২০১৩ সালের ইতিহাস কি তবে পুনরাবৃত্তি ঘটাতে যাচ্ছে? উত্তর খুঁজবে আগামী দিনের খেলা।