ঢাকা   শনিবার ১০ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

রেকর্ড রেমিট্যান্সে ব্যাংকিং খাতে চাঙ্গাভাব, ৯ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ আমানত প্রবৃদ্ধি মার্চে

অর্থ ও বাণিজ্য

শেয়ারবিজনেস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:৪৬, ৯ মে ২০২৫

রেকর্ড রেমিট্যান্সে ব্যাংকিং খাতে চাঙ্গাভাব, ৯ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ আমানত প্রবৃদ্ধি মার্চে

মার্চ মাসে দেশের ব্যাংকিং খাতে ফের দেখা দিয়েছে প্রাণচাঞ্চল্য। বিদেশে কর্মরত প্রবাসীদের পাঠানো রেকর্ড ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এবং গ্রাহক আস্থার প্রত্যাবর্তনের ফলে ব্যাংক খাতে আমানতের প্রবৃদ্ধি পৌঁছেছে ৯ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মার্চ শেষে ব্যাংকে মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকায়, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ বেশি।

বিগত বছরের জুনে আমানতের প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ২৫ শতাংশ। কিন্তু আগস্টে তা নেমে আসে ৭ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে, যা ছিল ১৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। তবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে প্রবৃদ্ধির হার ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং মার্চে তা ৯ মাসের রেকর্ড ছুঁয়েছে।

ব্যাংক খাতের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঋণ বিতরণে অনিয়ম ও দুর্বল ব্যাংকগুলোর অস্বচ্ছলতা গ্রাহকদের আস্থাহীনতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব নেওয়ার পর ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় সুশাসন ফেরাতে বিভিন্ন সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়—যেমন পরিচালনা পর্ষদের পুনর্গঠন, বেনামী ঋণ বন্ধ এবং তারল্য জোগানে নীতিগত সহায়তা।

ফলে ভালো অবস্থানে থাকা ব্যাংকগুলোতে আমানত বাড়তে থাকে। বিশেষ করে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত সুদহার অফার করায় অনেক গ্রাহক আবার ব্যাংকের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন। তবে ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না যে এই প্রবৃদ্ধির ধারা দীর্ঘমেয়াদে স্থায়ী হবে কিনা।

অপরদিকে, ব্যাংকের বাইরে থাকা নগদ অর্থের পরিমাণেও মার্চে বৃদ্ধি পেয়েছে। ঈদ উপলক্ষে কেনাকাটা ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের হাতে নগদ অর্থ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকায়, যা ফেব্রুয়ারির তুলনায় ২৫ হাজার কোটি টাকা বেশি।

অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করে বলছেন, ব্যাংকের বাইরে টাকা বাড়লে অর্থনীতির জন্য তা নেতিবাচক—কারণ এতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা কমে যায় এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হয়। তাই রেমিট্যান্স ও সুদের মাধ্যমে গ্রাহকদের ব্যাংকমুখী করা এবং দীর্ঘমেয়াদি আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন সময়ের দাবি।