
রাজধানীর কলাবাগান থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান এবং এসআই বেলাল উদ্দিন ও মান্নানকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ভুক্তভোগী আবদুল ওয়াদুদের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অভিযোগে বলা হয়েছে, পুলিশ ‘সন্ত্রাসীদের’ সঙ্গে নিয়ে রাতের অন্ধকারে বাসায় ঢুকে চাঁদাবাজি, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তৈরি হয়েছে ব্যাপক বিতর্ক ও উদ্বেগ।
ঘটনার সূত্রপাত ২৯ এপ্রিল রাতে। অভিযোগকারীর দাবি, কলাবাগান থানার এসআই বেলালের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ও ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী তাঁর বাসায় জোর করে প্রবেশ করে। এরপর তারা ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করে এবং অর্থ দাবি করে। ৯৯৯-এ ফোন করার পর অন্য থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এলেও ওসি মোক্তারুজ্জামান উপস্থিত হয়ে তাদের ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। এরপর এক ভাড়াটে ও নাইটগার্ডকে গাড়িতে তোলার নির্দেশ দেন তিনি। অভিযোগ অনুযায়ী, পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ ছিল যে ওসি নিজের মুখে এক কোটি টাকা ঘুষ দাবি করেন এবং পরে দেনদরবারে দুই লাখ টাকা আদায় করেন।
ভুক্তভোগীর দাবি অনুযায়ী, পুলিশ তাঁর বাসা থেকে ল্যাপটপ, কম্পিউটার, সিসিটিভির হার্ডডিস্কসহ বেশ কিছু মূল্যবান জিনিস নিয়ে যায়। পরে শুধুমাত্র একটি ল্যাপটপ ফেরত দেওয়া হয়। সিসিটিভি ফুটেজ ও ভিডিও প্রমাণও তাঁর কাছে রয়েছে বলে তিনি জানান।
ডিএমপি’র একটি সূত্র জানিয়েছে, এই ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলছে। তবে পুলিশের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, “মব কন্ট্রোল” করতে না পারার কারণেই বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে অভ্যন্তরীণভাবে আরও গুরুতর অভিযোগের বিষয়েও অনুসন্ধান চলছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, অভিযুক্ত বাসাটি রাজনৈতিক সংযোগের কেন্দ্র ছিল, যেখানে আওয়ামী লীগের কিছু নেতা-কর্মীর নিয়মিত যাতায়াত ছিল। তাই ঘটনাটি রাজনৈতিক প্রভাবেও পরিচালিত হতে পারে বলে সন্দেহ করছেন অনেকে।
এই ঘটনায় পুলিশের ভাবমূর্তিতে বড় ধাক্কা লাগছে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকেরা। এখন দেখার বিষয়, সাময়িক বরখাস্তের পর কী হয় চূড়ান্ত তদন্তে—অভিযুক্তরা কি দোষী প্রমাণিত হয়ে শাস্তি পাবেন, নাকি ধামাচাপা পড়বে আরেকটি স্পর্শকাতর ঘটনা?