facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪

Walton

খাতুনগঞ্জে মসলার দাম কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ ৫০ টাকা বেড়েছে


০২ জানুয়ারি ২০১৮ মঙ্গলবার, ০৯:১৮  এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক


খাতুনগঞ্জে মসলার দাম কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ ৫০ টাকা বেড়েছে

বছরের একেবারে শেষ সময়ে এসে দেশে ভোগ্যপণ্যের বৃহত্তম পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে দাম বেড়েছে অধিকাংশ মসলার।

১৫ দিনের ব্যবধানে এখানে বিভিন্ন ধরনের মসলার দাম কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ ৫০ টাকা বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে মসলাপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির বুকিংদর বৃদ্ধিকে দায়ী করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা। তবে অনেকেই দাম বাড়ার পেছনে বড় ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকদের দায়ী করেছেন। তাদের দাবি, বাড়তি বুকিংদরে কেনা মসলা এখনো দেশে পৌঁছায়নি। এর আগেই বাড়তি চাহিদার অজুহাত কাজে লাগিয়ে আমদানিকারকরা মসলাপণ্যের দাম বাড়িয়েছেন।

গতকাল খাতুনগঞ্জ বাজারে মসলার আড়তগুলো ঘুরে ভারত থেকে আমদানি করা প্রতি কেজি জিরা ৩৭০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। ১৫ দিন আগেও পণ্যটি কেজিপ্রতি ৩৪০-৩৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সেই হিসাবে পণ্যটির দাম কেজিতে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা বেড়েছে। অন্যদিকে সিরিয়া থেকে আমদানি করা জিরা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩৮৫ টাকায়। ১৫ দিনের ব্যবধানে পণ্যটির দাম কেজিতে ৩০ টাকা বেড়েছে। স্থানীয় পাইকারি বাজারে জয়ত্রীর দাম ৬৫ টাকা বেড়ে কেজিপ্রতি ১ হাজার ৩৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিন প্রতি কেজি দারচিনি মানভেদে ২০৮-২১০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। ১৫ দিনের ব্যবধানে পণ্যটির দাম কেজিতে ১২ টাকা বেড়েছে। একই প্রবণতা দেখা গেছে গোলমরিচের বাজারেও। ১৫ দিনের ব্যবধানে ২০ টাকা বেড়ে পণ্যটি কেজিপ্রতি ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লবঙ্গের দাম বেড়েছে কেজিতে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা। বর্তমানে প্রতি কেজি লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে ৯৩০ টাকায়। জায়ফল ও মিষ্টি জিরার দাম কেজিপ্রতি যথাক্রমে ২০ ও ২৫ টাকা বেড়েছে। পণ্য দুটি প্রতি কেজি যথাক্রমে ৪৪০ ও ১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে আমদানি করা শুকনা মরিচের দাম কেজিতে সর্বোচ্চ ১০ টাকা বেড়েছে। পণ্যটি প্রতি কেজি ১১৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর দেশে উৎপাদিত শুকনা মরিচ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১২৫ টাকায়। ১৫ দিনের ব্যবধানে পণ্যটির দাম কেজিতে সর্বোচ্চ ১০ টাকা বেড়েছে। দেশে উৎপাদিত শুকনা হলুদের দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে আমদানি করা হলুদের দাম বেড়েছে কেজিতে সর্বোচ্চ ৬ টাকা। পণ্যটি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১১৮ টাকায়। অধিকাংশ মসলাপণ্যের দাম বাড়লেও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে এলাচের বাজারে। গতকাল পণ্যটি কেজিপ্রতি ১ হাজার ২৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। ১৫ দিন আগেও প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হয়েছিল কেজিপ্রতি ১ হাজার ৩৫০ টাকায়। সেই হিসাবে পণ্যটির দাম কেজিতে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা কমেছে। মূলত আমদানি বেড়ে যাওয়ার জের ধরে এলাচের দাম কমেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

স্থানীয় পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি বছর শীত মৌসুমে দেশে বিয়ের মৌসুম শুরু হয়। পাশাপাশি এ সময় দেশজুড়ে ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান বেড়ে যাওয়ায় মসলার চাহিদা বাড়ে। এর সিংহভাগই পূরণ করা হয় আমদানির মাধ্যমে। ভারত থেকে বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে মসলাপণ্য আমদানি হয়। এছাড়া চীন, পাকিস্তান, সিরিয়া, আফগানিস্তান, কলম্বিয়া, ভিয়েতনাম, গুয়াতেমালা, সিঙ্গাপুর, মাদাগাসকার, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা, আরব আমিরাতসহ ২৪টির বেশি দেশ থেকে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ১২ রকমের মসলাপণ্য আমদানি করা হয়। এবারো এর ব্যতিক্রম হয়নি। একই সময় আন্তর্জাতিক বাজারে মসলাপণ্যের দাম ও বুকিংদর বেড়ে গেছে। এ কারণে বাড়তি দামে মসলা আমদানি করছেন দেশীয় আমদানিকারকরা। এর জের ধরে কিছুদিন থেকে পাইকারি পর্যায়ে মসলার দাম বাড়তি রয়েছে।

খাতুনগঞ্জের মেসার্স আবেদীন ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. সরওয়ার হোসেন বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে মসলাপণ্যের বুকিংদর বাড়লেও এ বাড়তি দরের আওতায় আমদানি করা মসলা এখনো দেশে এসে পৌঁছায়নি। বড় বড় আমদানিকারক আগেই কম দামে মসলাপণ্য আমদানি করে মজুদ করে রেখেছিলেন। এখন বাড়তি দামের সুযোগে তারা আগে আমদানি করা এসব মসলা বাজারে ছাড়ছেন। ফলে ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তাদের পকেটে বাড়তি লাভ ঢুকছে। কিছুদিনের মধ্যে বাড়তি বুকিংদরে আমদানি করা মসলা বাজারজাত শুরু হলে পণ্যটির দাম আরো বাড়তে পারে বলে মনে করছেন তিনি।

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: