facebook twitter You Tube rss bangla fonts

ঢাকা, ১৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪

Walton

কিছু হাউজের বোর্ডে সমস্যা রয়েছে : বিএসইসি কমিশনার


২৩ মার্চ ২০২৩ বৃহস্পতিবার, ০৫:৫৮  পিএম

স্টাফ রিপোর্টার

শেয়ার বিজনেস24.কম


কিছু হাউজের বোর্ডে সমস্যা রয়েছে : বিএসইসি কমিশনার

কিছু হাউজের বোর্ডে সমস্যা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএসইসি কমিশনার মো. আব্দুল হালিম।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড আয়োজিত ডিএসই’র ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির সিইও এবং কমপ্লায়েন্স অফিসারদের জন্য ‘Effective Compliance of Securities Related Laws” শীর্ষক দুই দিন ব্যাপি (২১ এবং ২৩ মার্চ ) সচেতনতা মূলক কর্মশালা ডিএসই টাওয়ার, মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠিত হয়৷ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে বিএসইসি’র কমিশনার মোঃ আব্দুল হালিম একথা বলেন৷

এছাড়াও কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম, পরিচালক মোহাম্মদ ফকরুল ইসলাম মজুমদার এবং অতিরিক্ত পরিচালক আবুল কালাম আজাদ৷

সচেতনতা মূলক কর্মশালায় পেপার উপস্থাপন করেন ডিএসই’র প্রধান রেগুলেটরি কর্মকর্তা খায়রুল বাসার আবু তাহের মোহাম্মদ৷

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এম সাইফুর রহমান৷ স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেন-এই কর্মশালার উদ্দেশ্য হচ্ছে কার্যকর কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা৷ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষার একটি রেগুলেটরি কাঠামো রয়েছে৷ সেই রেগুলেটরি কাঠামো নিশ্চিতভাবে পরিপালনের মাধ্যমেই বিনিয়োগকারীগনের স্বার্থে সুরক্ষা দেয়া সম্ভব৷ বিএসইসি এই রুলস এবং রেগুলেশনের কার্যকর প্রয়োগের উপর গুরুত্ব আরোপ করছেন৷ ইতোপূর্বেও বিভিন্ন ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং পরিচালকবৃন্দের জন্যেও প্রশিক্ষণ কর্মশালা সম্পন্ন হয়েছে৷ বিএসইসি এবং ডিএসই আশা করছে যে, এ ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মশালার মাধ্যমে সিকিউরিটিজ সম্পর্কিত যে আইন-কানুন রয়েছে সেগুলোর কার্যকর প্রয়োগের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন তথা এই কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে পারব৷ আর এই কমপ্লায়েন্সের মাধ্যমেই বাজারে মূলতঃ ক্যাপিটাল সম্প্রসারণ করা সম্ভব৷

পরে ডিএসই’র প্রধান রেগুলেটরি কর্মকর্তা খায়রুল বাসার আবু তাহের মোহাম্মদ ‘Effective Compliance of Securities Related Laws” বিষয়ে পেপার উপস্থাপন করেন৷

এসময় তিনি বলেন, এই অনুষ্ঠানের প্রধান উদ্দেশ্য হলো: ক্লায়েন্ট/বিনিয়োগকারীদের তহবিল ও সিকিউরিটিজের নিরাপত্তা, সিকিউরিটিজ সংক্রান্ত আইনের পরিপালন এবং ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির মালিকদের সচেতনতা বৃদ্ধি নিশ্চিত করা৷ অনিয়ম রোধে বিএসইসি কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: সিসিএ থেকে নগদ উত্তোলন নিষিদ্ধ করা, মাসিক ভিত্তিতে সিসিএ মনিটর করতে ডিএসইকে নির্দেশনা, অনলাইনে মাসিক সিসিএ রিপোর্ট সংগ্রহের জন্য একটি সফটওয়্যার তৈরি করতে ডিএসইকে নির্দেশনা, সিসিএ-তে ঘাটতি পাওয়া গেলে কিছু শর্ত আরোপের নির্দেশনা জারি, ডিএসইকে ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির চেয়ারম্যান, পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং শেয়ারহোল্ডারদের জন্য সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করার নির্দেশনা, ডিএসইকে ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির সিইও এবং কমপ্লায়েন্স অফিসারদের জন্য প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামের ব্যবস্থা করার নির্দেশনা, ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির কর্মীদের জন্য প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং বাজারের মধ্যস্থতাকারীদের জন্য “স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী পুরস্কার”প্রবর্তন৷ অনিয়ম রোধে ডিএসই কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: মাসিক ভিত্তিতে সিসিএ পর্যবেক্ষণ করা, ট্রেকহোল্ডার কোম্পানিগুলিতে পরিদর্শনের সংখ্যা বাড়নো, সিসিএ রিপোর্ট সংগ্রহের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরি, সিসিএতে ঘাটতি পাওয়া গেলে কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী শর্ত আরোপ করা,ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির চেয়ারম্যান, পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং শেয়ারহোল্ডারদের জন্য সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা, ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির সিইও এবং কমপ্লায়েন্স অফিসারদের জন্য প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামের ব্যবস্থা করা এবং ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির কর্মীদের জন্য প্রশিক্ষণ এবং উন্নয়ন কর্মসূচির ব্যবস্থা করা৷ এছাড়াও তিনি প্রধান নন কমপ্লায়েন্স এবং প্রধান প্রধান কমপ্লায়েন্সের মাসিক, এি-মাসিক, অধবার্ষিকী ও বার্ষিকী বিষয়গুলো আলোচনা করেন৷

প্রধান অতিথি বিএসইসি’র কমিশনার মোঃ আব্দুল হালিম বলেন, অভিজ্ঞতার আলোকে দেখেছি রুলস এবং রেগুলেনসগুলোর সঠিক পরিপালন না করার পেছনে দুটো কারণ রয়েছে৷ প্রথমতঃ জানার ঘাটতি বা অজ্ঞতা এবং দ্বিতীয়তঃ ইচ্ছাকৃত৷ এখানে আমরা যারা উপস্থিত হয়েছি সবাই চাই পুঁজিবাজার উন্নত হোক৷ পুঁজিবাজার উন্নত হলে এর সাথে সংশ্লিষ্ট আমরা সকলেই লাভবান হব৷ আমাদের সকলের উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন, আর তা হলঃ পুঁজিবাজারের উন্নয়ন৷ আর এই উদ্দেশ্য পূরণে আমাদের সকলের বিএসইসি’র যে রেগুলেশন ও কমপ্লায়েন্সগুলো রয়েছে সেগুলোর লঙ্ঘন না করে সঠিকভাবে এগুলো পরিপালন করতে হবে৷

তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজারে কাজ করতে হলে বাজারের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে এ সংক্রান্ত সকল আইন-কানুন, বিধি-বিধান ও প্রবিধানসমূহ ভালভাবে জানতে হবে এবং এর সঠিক প্রয়োগও করতে হবে। এই জানার মধ্যে যে গ্যাপ রয়েছে তা পূরণে এ প্রবিধানমালাসমূহ আরও ভালোভাবে জানানো এবং আপডেট করার জন্য আজকের এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন৷ কনসোলিটেড কাষ্টমার একাউন্টে (সিসিএ) কোন ঘাটতি হলে তাত্ক্ষণিকভাবে এটা এক্সচেঞ্জকে জানাতে হবে৷ রুলস যখন প্রয়োগ করা হয় তখন সেখানে একটা উদ্দেশ্য থাকে৷ আমাদের এইসব রুলসগুলো কমপ্লায়েন্স করতে হবে৷ এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটলে তা সাথে সাথে কমিশনকে জানাতে হবে৷ যখন আপনারা বা ট্রেকহোল্ডাররা জানাননি আমাদের পরিদর্শনের সময় যখন এটা ধরা পড়ে তখন এটা ভায়োলেশন হয়ে যায়৷ আমাদের অভিন্ন উদ্দেশ্য পূরণে আমাদের সকলের মধ্যে একটা আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা থাকতে হবে৷ অতীতের ভুলভ্রান্তি যা হয়েছে তার জন্য কাউকে দোষারোপ না করে যেসব বিধি বিধান আমাদের সামনে রয়েছে সেগুলো সঠিকভাবে পরিপালনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় সকলকে একসাথে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে৷

তিনি আরও বলেন, কিছু হাউজ বা ট্রেকহোল্ডারের বোর্ডের সমস্যা রয়েছে৷ চেয়ারম্যান বা পরিচালকের ভেতর দ্বন্দ্ব, সংঘাত হচ্ছে এবং অডিটেড ফিন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট সময়মত জমা না দেয়া ও স্বচ্ছতা বজায় না রাখা এগুলোর সমাধান করতে হবে এবং প্রবিধানসমূহের সঠিক পরিপালন করতে হবে৷ এখানে আজ যারা উপস্থিত রয়েছেন, আপনারা যোগ্য, দক্ষ ও অভিজ্ঞ৷ আপনাদের স্ব স্ব হাউজ যদি নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে চালান তাহলে ডিএসই বা কমিশনের জন্য আপনাদের পর্যবেক্ষণ বা মনিটর করা সহজ হবে এবং আপনাদের সাথে আস্থার সম্পর্ক যত দৃঢ় হবে, আপনাদের ওখানে পরিদর্শন বা ইন্সপেকশনের সংখ্যাও তত কমে আসবে৷ প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন রাখতে পরিদর্শন যাতে কম হয় তারজন্য আইন কানুন ও বিধি বিধানের সঠিক পরিপালনের মাধ্যমে আপনাকে এগিয়ে আসতে হবে৷

পরিশেষে, তিনি সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে বলেন, আসুন এমন একটা পরিবেশ তৈরী করি যে পরিবেশে বিনিয়োগকারীগণ বিনিয়োগের আস্থা পায়, এতে সকলেই লাভবান হওয়ার পাশাপাশি পুঁজিবাজারের উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখি৷

 

শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন: