
দেশ–বিদেশে প্লেনে ভ্রমণের সময় অনেকেই পছন্দের খাবার সঙ্গে নিতে চান। তবে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও কাস্টমস আইন অনুযায়ী সব ধরনের খাবার বহন করা যায় না। কিছু খাবার আকার, গন্ধ বা নিরাপত্তার কারণে সীমিত বা নিষিদ্ধ। ভ্রমণের সময় কোনো ঝামেলায় না পড়তে চাইলে আগে থেকেই জেনে নেওয়া জরুরি, কোন কোন খাবার প্লেনে বহন না করাই ভালো।
১. তরলজাতীয় খাবার ও পানীয়
পানির বোতল, জুস, দুধ, স্যুপ, তরকারি—এ ধরনের তরল খাবার ১০০ মিলিলিটারের বেশি হলে হাতে বহনের ব্যাগে (হ্যান্ড লাগেজে) নেওয়া যাবে না। আন্তর্জাতিক নিয়মে কেবল ছোট আকারে, স্বচ্ছ প্যাকেটে করে, বিশেষ পদ্ধতিতে নেওয়া যায়।
২. ঝাঁঝালো বা তীব্র গন্ধযুক্ত খাবার
শুঁটকি মাছ, কাঁচা পেঁয়াজ, গরুর ভুনা, শুকনা চাটনি বা অতিরিক্ত মসলা দেওয়া রান্না করা খাবার প্লেনে নেওয়া আইনত নিষিদ্ধ না হলেও বেশির ভাগ এয়ারলাইনের নীতিমালায় এসব নিরুৎসাহিত করা হয়। অস্বস্তিকর গন্ধের কারণে অন্য যাত্রীদের অসুবিধা হতে পারে বলেই এমন বিধিনিষেধ।
৩. কাঁচা ফলমূল বা সবজি (বিশেষ করে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে)
অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশেই কাঁচা আম, কাঁঠাল, কলা বা সবজি বহন নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রিত। এটি জৈব সুরক্ষা (বায়োসিকিউরিটি) আইনের আওতায় পড়ে, যার উদ্দেশ্য হলো রোগ বা পোকামাকড় বহনকারী কোনো জৈব উপাদান দেশের ভেতর প্রবেশ করতে না দেওয়া। প্রস্থান বা আগমন—উভয় ক্ষেত্রেই এসব খাদ্যদ্রব্য বহন করলে জানিয়ে দেওয়া বাধ্যতামূলক। না জানালে জরিমানাও হতে পারে।
৪. দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার
প্রক্রিয়াজাত নয়, এমন দুধ, ঘি, ছানা বা দই অনেক দেশে বহন করা সীমিত। এসবের মধ্যে জীবাণু বহনের ঝুঁকি থাকে, তাই আন্তর্জাতিকভাবে এসবে কঠোরতা আছে।
৫. পরিমাণে বেশি রান্না করা খাবার বা ঝোলজাতীয় কিছু
হাঁড়ি বা বড় কনটেইনারে করে ভাত, খিচুড়ি বা ঝোলজাতীয় খাবার বহন করা নিরাপত্তার কারণে নিষেধ। এসব খাবার অনিরাপদ হিসেবে গণ্য হতে পারে, বিশেষ করে যদি তা তরল বা আধা তরল হয়।
৬. নিজে প্যাক করা খাবার, যার উৎস অনির্ধারিত
আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে নিরাপত্তা ও কাস্টমসের জটিলতা এড়াতে অনেকে খাবার নিজে প্যাক করে নেন। কিন্তু খাবারটি কী উপায়ে তৈরি ও প্যাক করা হয়েছে, সেটা বোঝা না গেলে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। তাই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ অনেক সময় এ ধরনের খাবার ফেলে দিতে বলে।
৭. খাদ্যদ্রব্যের বড় চালান (কমার্শিয়াল পরিমাণে)
ভ্রমণকারীরা অনেক সময় আত্মীয়দের জন্য শুকনা খাবার বা পণ্য নিয়ে যেতে চান। তবে একাধিক প্যাকেট বা বড় প্যাকিং থাকলে সেটা বাণিজ্যিক (কমার্শিয়াল) হিসেবে বিবেচিত হয় এবং কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স বা শুল্কের আওতায় পড়ে।
শেষ কথা
দেশ ও এয়ারলাইনসভেদে খাদ্য বহনের নিয়ম ভিন্ন হতে পারে। তাই প্লেনে ওঠার আগে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনসের ওয়েবসাইট বা কাস্টমস গাইডলাইনে চোখ বুলিয়ে নিন। খাবার সঙ্গে নিতে চাইলে শুকনা ও হালকা কিছু বেছে নিন, ভালোভাবে প্যাক করুন এবং নিরাপত্তার স্বার্থে তরল খাবার বা তীব্র গন্ধযুক্ত খাবার থেকে বিরত থাকুন।