
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জর (ডিএসই) সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউজ শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানির (ট্রেক- ১৭১) কার্যক্রম পুনরায় শুরু হতে যাচ্ছে। ইতিমেধ্যে শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানির সব দায়-দেনাসহ শতভাগ মালিকানা কিনে নিয়েছে সাদ মুসা গ্রুপ। আগামী ২০২২ সালের জানুযারি থেকে ব্রোকারেজ হাউজটির কার্যক্রম পুরোদমে চালু করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে বিনিয়োগকারীদের অর্থ সমন্বয়সহ আরও বেশ কিছু শর্ত পরিপালন সাপেক্ষে বোকারেজ হাউজটি প্রায় দুই বছর পর চালু হচ্ছে। এতে নতুন করে আশার আলো দেখছেন নিয়োগকারীরা।
সম্প্রতি শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সার্বিক দিক বিবেচনায় বোকারেজ হাউজটিকে কার্যক্রমে ফেরার অনুমোদন দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বিএসইসি’র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ডিএসই`র সুপারিশ করা শর্তাবলী পরিপালন সাপেক্ষে শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানির কার্যাবলী পরিচালনার অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ ব্যাপারে বিএসইসি’র এসআরআই বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এর আগে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি পূরণ, শেয়ার হস্তান্তর বা বিক্রির প্রক্রিয়া যথাযথভাবে সম্পন্ন করা, সমন্বিত গ্রাহক হিসাবের ওপর প্রচলিত ব্যাংক রেটে চার বছরের সুদ আদায় করে গ্রাহকদের হিসেবে যথাযথভাবে জমাকরণ সাপেক্ষে শাহ মোহাম্মদ সগীরের কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেয় বিএসইসি। আর এ কাজটি তদারকির জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় ডিএসইকে। ইতিমধ্যে ডিএসই বিএসইসি’র নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক অর্থিক অবস্থাসহ সমন্বিত গ্রাহকদের হিসাবে আরও সিকিউরিটিজ (শেয়ার) ঘাটতি যাচাই-বাছাই করে সম্প্রতি স্ট্যাটাস রিপোর্ট দাখিল করেছে। ওই রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে দ্রুত ব্রোকারেজ হাউজটির কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি।
এদিকে, রাজধানীর মতিঝিলে মধুমিতা ভবনে অবস্থিত শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্রোকারেজ হাউজটি চালু করার শেষ প্রস্তুতি চলছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে হাউজটি চালু করার জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হবে। আর হাউজটি পুনরায় চালু করার বিষয়ে ডিএসই’র সার্বিক সহযোগীতা অব্যাহত রয়েছে। এদিকে, পুনরায় কার্যক্রম চালু হলে পুরোনো বিনিয়োগকারীরা আবার হাউজে ব্যবসা করতে ফিরে আসবেন বলে প্রত্যাশা শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানির।
আবু আহসান নামে শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানির একজন বিনিয়োগকারী জানান, ব্রোকারেজ হাউজটি পুনরায় চালু হওয়ার খবরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের আইন বহির্ভূত কার্যক্রমের কারণে সমন্বিত গ্রহক হিসাবে ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কে অন্য হাউজে চলে যান। তবে সমন্বিত গ্রহক হিসাবে ঘাটতি থাকার কারণে যেসব বিনিয়োগকারীদের টাকা আটকে ছিলো এখন তা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে সাদ মুসা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহম্মদ মহসিন বলেন, ‘নতুন বছরের শুরু থেকে আমরা শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালনা করা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ লক্ষ্যে কাজ চলছে। সব কিছু ঠিক থাকলে আশা করছি, নির্ধারিত সময়ে প্রতিষ্ঠানটি পুনরায় চালু করতে পারবো।’
এদিকে, শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানির তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদ সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে রক্ষিত বিনিয়োগকারীদের অর্থ আইন বহির্ভূতভাবে ব্যবহারের কারণে প্রায় ১৩ কোটি টাকা ঘাটতি দেখা দেয়। এতে প্রতিষ্ঠানটির তৎকালীন পরিচালকরা সিকিউরিটিজ লঙ্ঘন করেন। এ আইন বহির্ভূত কার্মকাণ্ডের জন্য শাহ মোহাম্মদ সগীরের তৎকালীন পরিচালকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। এ সিদ্ধান্ত কার্যকর না করা পর্যন্ত ডিএসই`র শেয়ারে তাদের ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত অর্জিত ও স্থগিত মুনাফা সংরক্ষণ থাকবে।
শেয়ার বিজনেস24.কম