ঢাকা   মঙ্গলবার ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

পুঁজিবাজারে ঘুরে দাঁড়াতে ৫ বছরের রোডম্যাপ

পুঁজিবাজারে ঘুরে দাঁড়াতে ৫ বছরের রোডম্যাপ

পুঁজিবাজারে নেগেটিভ ইক্যুইটি সংকটে পাঁচ বছরের ‘উদ্ধার পরিকল্পনা’ চাইল মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন


বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদি মন্দার কারণে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। বিশেষ করে নেগেটিভ ইক্যুইটি, আনরিয়ালাইজড লস এবং বিনিয়োগ পরিবেশের অবনতি তাদের অস্তিত্ব সংকটে ফেলেছে। এই জটিল পরিস্থিতি থেকে ধাপে ধাপে উত্তরণে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) পাঁচ বছরের সময়সীমা চেয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গত সোমবার (১২ মে) বিএমবিএ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মাজেদা খাতুন। এতে সদস্যভুক্ত মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীরাও অংশ নেন। সভায় পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি, বিশেষ করে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর আর্থিক ঝুঁকি এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট নিয়ে আলোচনা হয়।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে মাজেদা খাতুন বলেন, “বাজারের ধারাবাহিক পতনের কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা তাদের মূলধন হারাচ্ছেন। দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এই সমস্যা আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।” তিনি নেগেটিভ ইক্যুইটি সমস্যাকে মূলধারার সংকট হিসেবে উল্লেখ করে তা সমাধানে সময়োপযোগী নীতিগত সহায়তার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।

বিএমবিএ সূত্রে জানা গেছে, সংগঠনটি ২০২৫ থেকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছর মেয়াদি সময়সীমা চেয়ে বিএসইসির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করবে। এই সময়সীমা অনুযায়ী প্রতিবছর ধাপে ধাপে নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে:

  • ২০২৫ সালে ৫%

  • ২০২৬ সালে ১০%

  • ২০২৭ সালে ১৫%

  • ২০২৮ সালে ২০%

  • ২০২৯ সালে ২৫%

এই প্রস্তাবের মাধ্যমে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো ধাপে ধাপে তাদের আর্থিক কাঠামো সুসংহত করার সুযোগ পাবে এবং পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা অর্জন সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

অংশগ্রহণকারী বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন, নেগেটিভ ইক্যুইটি সমস্যার সমাধানে এ ধরনের সময়সীমা নির্ধারণ একটি বাস্তবভিত্তিক উদ্যোগ। তবে, তারা সতর্ক করে বলেন— এই সময়সীমার সুফল নিশ্চিত করতে হলে প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা, যথাযথ বাস্তবায়ন ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ

বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধুমাত্র সময় বাড়ানো সমস্যার স্থায়ী সমাধান নয়, বরং সেই সময়কে কীভাবে ব্যবহার করা হবে— তা-ই হবে আসল চাবিকাঠি। তাই বিএসইসি, বিএমবিএসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে একযোগে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।