
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনবিরোধী অভিযানের জেরে লস অ্যাঞ্জেলেসসহ আশপাশের এলাকায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত রোববার শহরটিতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের নির্দেশ দেন। ১৯৯২ সালের পর এই প্রথম কোনো প্রেসিডেন্ট লস অ্যাঞ্জেলেসে এই বাহিনী মাঠে নামালেন। উল্লেখ্য, ওই বছর একজন কৃষ্ণাঙ্গ চালক রডনি কিংকে মারধরের ঘটনায় শ্বেতাঙ্গ পুলিশদের খালাস দেওয়ার পর দাঙ্গা শুরু হলে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছিল।
ন্যাশনাল গার্ড যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর রিজার্ভ বাহিনীর অংশ, যারা খণ্ডকালীন ভিত্তিতে কাজ করেন। এ বাহিনী প্রেসিডেন্ট এবং অঙ্গরাজ্যের গভর্নর উভয়ের অধীনে কাজ করতে পারে। সাধারণত দেশীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জরুরি অবস্থা কিংবা নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকিতে এদের মোতায়েন করা হয়।
সাম্প্রতিক সময়েও বেশ কয়েকবার বিভিন্ন রাজ্যে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। করোনা মহামারির সময় মাস্ক ও টেস্ট কিট তৈরি, স্থাপনা জীবাণুমুক্তকরণ এবং জনসেবায় সক্রিয় ছিল এই বাহিনী। ২০২১ সালের ৭ জানুয়ারির ক্যাপিটল হামলার পরও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সদস্য পাঠানো হয়েছিল।
তবে প্রেসিডেন্টের সরাসরি নির্দেশে কেন্দ্রীয়ভাবে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের ঘটনা বিরল। এমন একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ট্রাম্প। ১৯৫৭ সালে বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে জননিরাপত্তা রক্ষায় আরকানস-এ প্রথম এই বাহিনী মোতায়েন হয় প্রেসিডেন্টের নির্দেশে। ১৯৬৭ সালে ডেট্রয়েট দাঙ্গা, ১৯৬৮ সালে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যাকাণ্ড পরবর্তী অস্থিরতা এবং ১৯৭০ সালে ডাক ধর্মঘটেও এদের মাঠে নামানো হয়েছিল।
ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই বাহিনী যুক্তরাষ্ট্রে শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষায় একাধিকবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এবারও উত্তপ্ত লস অ্যাঞ্জেলেসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাদেরই ভরসা করছে হোয়াইট হাউস।