ঢাকা   রোববার ০৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

অভিবাসী অভিযান ঘিরে উত্তাল লস অ্যাঞ্জেলেস, সহিংসতা ঠেকাতে ট্রাম্পের ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন

বিশেষ প্রতিবেদন

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৩:৪৬, ৮ জুন ২০২৫

আপডেট: ১৩:৪৯, ৮ জুন ২০২৫

অভিবাসী অভিযান ঘিরে উত্তাল লস অ্যাঞ্জেলেস, সহিংসতা ঠেকাতে ট্রাম্পের ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন

যুক্তরাষ্ট্রে অনিবন্ধিত অভিবাসীদের ধরপাকড় ঘিরে ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে বিক্ষোভ ও সহিংসতা। আইসিই (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট)–এর অভিযানে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে শহরের লাতিন অধ্যুষিত এলাকাগুলো। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জরুরি ভিত্তিতে দুই হাজার ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন।

শনিবার ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প প্রশাসনের ‘সীমান্ত জার’ টম হোম্যান বলেন, “আমরা লস অ্যাঞ্জেলেসকে নিরাপদ করব।” একইসঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন, রাত থেকেই ন্যাশনাল গার্ড সদস্যরা শহরে দায়িত্ব পালন শুরু করবে এবং অভিযানও চলবে।

শুক্রবার ও শনিবারের সংঘর্ষে বিশেষ করে শহরের প্যারামাউন্ট ডিস্ট্রিক্টে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। অনিবন্ধিত অভিবাসীদের তল্লাশি চালাতে গিয়ে আইসিই কর্মীরা স্থানীয় বাসিন্দাদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়েন। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়, লাঠিচার্জ করা হয়। অভিযানে শুধুমাত্র এই সপ্তাহেই ১১৮ জন অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৪ জন গ্রেপ্তার হন শুক্রবার।

এদিকে ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট গভর্নর গ্যাভিন নিউসম এই অভিযানকে ‘নিষ্ঠুর’ আখ্যা দিয়ে এর কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “মানবাধিকার লঙ্ঘন করে কাউকে নিরাপত্তা দেওয়া যায় না।”

উল্টো হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, এই অভিযান যুক্তরাষ্ট্রে ‘অবৈধ অপরাধীদের’ প্রবেশ ঠেকাতে জরুরি ও ন্যায়সংগত। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ক্যালিফোর্নিয়ার ব্যর্থ নেতৃত্ব তাদের নাগরিকদের সুরক্ষার দায় থেকে হাত তুলে নিয়েছে। এ কারণেই কেন্দ্রকে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে।”

বিক্ষোভ দমনে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির ঘোষণা দিয়ে এফবিআইয়ের উপপরিচালক ডন বনগিনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুঁশিয়ারি দেন, “আপনি অরাজকতা করলে, আমরা আটক করব। আইনশৃঙ্খলা বজায় থাকবে।”

লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসন ইস্যুতে উত্তেজনা এখনো অব্যাহত। অভিবাসীদের মানবিক সুরক্ষা বনাম রাষ্ট্রের নিরাপত্তা—এই দ্বন্দ্বে শহরজুড়ে তৈরি হয়েছে অস্থিরতা। প্রশাসন শক্ত অবস্থানে থাকলেও মানবাধিকার সংগঠনগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করছে পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কায়।