
আধুনিক জীবনে মানুষের মধ্যে বেড়ে চলেছে ভয়, উদ্বেগ ও হতাশা। উপার্জন আর ভোগের প্রতিযোগিতা মানুষের মনকে করে তুলেছে অস্থির। যুদ্ধবিগ্রহ ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় অনেকেই হারিয়ে ফেলছেন প্রশান্তি। কিন্তু একজন মুমিনের জীবনদর্শনে এর বিপরীত চিত্রই দেখা যায়—তিনি থাকেন শান্ত, দৃঢ় এবং আল্লাহমুখী।
ইসলামী জীবনবোধে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় রাখা, সৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তিদের সঙ্গ গ্রহণ করা এবং আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখা অস্থিরতা দূর করার প্রধান উপায়। মহান আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের সঙ্গে থাকেন, যারা তাঁকে ভয় করে এবং সৎকর্ম করে।” (সুরা নাহল, আয়াত ১২৮)। আল্লাহর প্রতি গভীর বিশ্বাস একজন মুমিনকে হতাশা থেকে মুক্ত করে, তার অন্তরকে প্রশান্তিতে ভরে তোলে।
হাজেরা (আ.)-এর অটল বিশ্বাস এর বড় উদাহরণ। ইবরাহিম (আ.) যখন তাঁকে মরুভূমিতে রেখে চলে যাচ্ছিলেন, হাজেরা (আ.) আল্লাহর উপর ভরসা করে বলেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের অবহেলা করবেন না।” এই অকুণ্ঠ বিশ্বাসের ফলস্বরূপ আল্লাহ তাদের দান করেছিলেন পবিত্র জমজমের জলধারা।
অস্থিরতা দূর করতে নিয়মিত ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া এবং তাঁর দয়া ও ক্ষমা স্মরণ করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ বলেন, “ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো।” (সুরা বাকারা, আয়াত ৪৫)। নবীজি (সা.) নিজেও দুশ্চিন্তা ও কষ্টের মুহূর্তে নামাজে দাঁড়াতেন।
সবশেষে, মনকে শান্ত রাখতে এ বিশ্বাস দৃঢ় করতে হবে যে, আল্লাহর ইচ্ছা ও অনুমতি ছাড়া কোনো কিছুই আমাদের ক্ষতি বা উপকার করতে পারে না। এ বিশ্বাসই একজন মুমিনকে ভরসা দেয় এবং তাকে অস্থিরতা থেকে মুক্ত রাখে।
সারকথা, আল্লাহমুখী জীবন, ঈমানি ভরসা এবং ধৈর্য-নামাজের মাধ্যমে আমরা অস্থিরতা জয় করে প্রশান্ত মন পেতে পারি।