
টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পাভেল দুরভ জানিয়েছেন, তিনি তাঁর সব সম্পদ শতাধিক সন্তানের মধ্যে সমানভাবে ভাগ করে দেবেন। ৪০ বছর বয়সী এই রুশ বংশোদ্ভূত প্রযুক্তি উদ্যোক্তা বলেন, তাঁর ছয় সন্তান এবং শুক্রাণু দাতা হিসেবে জন্ম নেওয়া অন্য সন্তানদের মধ্যে কোনো পার্থক্য করবেন না।
সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে দুরভ জানান, তিন নারীর গর্ভে তাঁর ছয় সন্তানের জন্ম হয়েছে এবং তাঁর শুক্রাণু দানের মাধ্যমে শতাধিক সন্তানের জন্ম হয়েছে। তিনি বলেন, “তারা সবাই আমার সন্তান এবং তাদের সবার সমান অধিকার রয়েছে। আমি চাই না, আমার মৃত্যুর পর তারা পরস্পরের সঙ্গে লড়াই করুক।” ইতিমধ্যেই তিনি এ–সংক্রান্ত উইল লিখেছেন।
তিনি জানান, বিগত ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি শুক্রাণু দান করছেন এবং একজন চিকিৎসকের ভাষ্যমতে, তাঁর ‘উন্নত মানের’ শুক্রাণু নাগরিক দায়িত্ব হিসেবে মানুষের উপকারে এসেছে। ব্লুমবার্গের তথ্যমতে, দুরভের সম্পদ প্রায় ১৩.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, তবে দুরভ বলেন এ হিসাব ‘তাত্ত্বিক’ এবং বাস্তবে তাঁর হাতে নগদ অর্থ অনেক কম।
তবে সন্তানরা সহজে এ সম্পদ পাবেন না। তিনি বলেছেন, আগামী ৩০ বছর পর্যন্ত তাঁর কোনো সন্তানই সম্পদ পাবে না, যেন তারা সাধারণ মানুষের মতো বড় হয়ে আত্মনির্ভরশীল হতে পারে। ২০১৩ সালে বিটকয়েনে বিনিয়োগ করে তিনি সম্পদ করেছেন এবং তাঁর মূল লক্ষ্য সন্তানদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস, সৃজনশীলতা ও পরিশ্রমের মানসিকতা তৈরি করা।
দুবাইয়ে বসবাসকারী দুরভ বলেন, তাঁর কাজ ঝুঁকিপূর্ণ, তাই আগেভাগেই উইল তৈরি করেছেন যেন তাঁর সন্তান ও প্রতিষ্ঠান টেলিগ্রাম সুরক্ষিত থাকে এবং সবসময় তাঁর মূল্যবোধ বহন করে।
টেলিগ্রাম বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপ, যেখানে মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারী সংখ্যা ১০০ কোটি ছাড়িয়েছে। তবে মাদক ব্যবসা, অর্থপাচার ও শিশু পর্নোগ্রাফি ছড়ানোর অভিযোগে প্যারিসে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন দুরভ, যা তিনি অস্বীকার করে বলেছেন, “অপরাধীরা অ্যাপ ব্যবহার করে বলেই আমাদের অপরাধী বলা যায় না — এটি হাস্যকর ও অযৌক্তিক।”