রাজধানীর হাটে গরু যথেষ্ট, বেচাকেনায় গতি

পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হতেই রাজধানীর কোরবানির পশুর হাটগুলোতে ক্রেতার ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। আজ বৃহস্পতিবার গাবতলীসহ বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটে গরুর সরবরাহ যথেষ্ট এবং ধীরে ধীরে বেড়ে চলেছে বেচাকেনাও। ইজারাদার ও বিক্রেতারা বলছেন, এবার গরুর সংখ্যা যেমন প্রচুর, তেমনি বিক্রিও ভালো হচ্ছে।

গাবতলী হাটে দুপুরে গিয়ে দেখা গেছে, দলে দলে ক্রেতা আসছেন। অনেকে পরিবারের নারী-শিশু সদস্যদের নিয়েও হাটে এসেছেন। হাটের সামনের সড়কে ক্রেতার চাপের কারণে যানজটও দেখা গেছে। ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতারা পশু দেখে দামদর করছেন, পছন্দ হলে কিনে নিচ্ছেন। হাসিল ঘরের সামনেও দেখা গেছে লম্বা লাইন—ক্রেতারা গরু কিনে বিক্রেতার সঙ্গে হাসিল পরিশোধে দাঁড়িয়ে আছেন।

মোহাম্মদপুরের ফরহাদ হোসেন জানান, বছিলা হাটে দাম বেশি মনে হওয়ায় গাবতলী এসে ২ লাখ ৫ হাজার টাকায় পছন্দের গরু কিনেছেন, যা অন্য হাটে আড়াই লাখ টাকা চাইছিল। তার মতে, গাবতলীতে সরবরাহ বেশি হওয়ায় তুলনামূলক ভালো দামে গরু পাওয়া যাচ্ছে।

তবে বিক্রেতারা বলছেন, হাটে গরু বেশি থাকলেও এখনো ক্রেতা কিছুটা কম। নাটোরের সালাম মিয়া ৪৫টি গরু এনেছেন, এখন পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে মাত্র ৯টি। তিনি জানান, মূল হাটের ভেতরের অংশে কাদা ও পানি থাকায় অনেকে ঢুকতেই চাচ্ছেন না, সামনের দিক থেকেই গরু কিনে চলে যাচ্ছেন।

হাটের বাইরে গরু নিয়ে দাঁড়িয়ে ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা করছেন অনেক পাইকার। ‘স্যার, একদম দেশি ষাঁড়, ভালো গরু’—এই ডাকে থামছেন অনেকেই।

গরুর পাশাপাশি এবার খাসির বিক্রিও ভালো। পাবনার আমিনপুর থেকে আসা রবিন বিশ্বাস জানান, এনেছিলেন ১৮০টি খাসি, বিক্রি করেছেন ১০০টিরও বেশি। মাঝারি আকারের খাসি বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ হাজার টাকায়।

বিকেলে হাটে ক্রেতার চাপ আরও বাড়ে। গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘিরে থাকা যানজটে অনেক ক্রেতাকেই হেঁটে হাটে আসতে দেখা গেছে। মিরপুরের টেকনিক্যাল মোড় থেকে শুরু হয়ে গাবতলী পর্যন্ত রাস্তা ছিল যানজটে অচল।

গাবতলী হাটের ইজারাদার এস এ সিদ্দিক সাজু জানান, বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি গরু বিক্রি হয়েছে। এখনো হাটে ৪০ হাজারের বেশি গরু রয়েছে। সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকায় দাম সহনীয়। উত্তরা দিয়াবাড়ি ও ভাটারার হাটগুলোতেও ক্রেতারা পছন্দের গরু সহনীয় দামে কিনতে পারছেন বলে জানিয়েছেন।

ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। সরবরাহ বেশি হওয়ায় বিক্রেতারা কিছুটা চাপ অনুভব করলেও ক্রেতাদের জন্য এটি একটি সুযোগ—সাশ্রয়ে ভালো পশু কেনার।