ঢাকা   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

গুমের গল্প যেন হরর মুভি: “ভদ্রলোকেরাই” করেছে এসব ভয়াবহ কাজ — প্রধান উপদেষ্টা

গুমের গল্প যেন হরর মুভি: “ভদ্রলোকেরাই” করেছে এসব ভয়াবহ কাজ — প্রধান উপদেষ্টা

গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন গ্রহণ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “কী ভয়াবহ একেকটি ঘটনা! আমাদের সমাজের ভদ্রলোকেরা, আমাদের আত্মীয়–পরিজনেরাই এ ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে।” আজ বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনপ্রধান বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী এই প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার হাতে তুলে দেন। এ সময় কমিশনের সদস্যসহ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই প্রতিবেদন শুধু দেশের নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আগ্রহ তৈরি করেছে। তিনি এর ওয়েবসাইট ও বই আকারে প্রকাশের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে বলেন, “এত ভয়াবহ ও গা শিউরে ওঠার মতো ঘটনার ভিত্তিতে একটি হরর মিউজিয়াম হওয়া উচিত।” তিনি বন্দিশালার নির্মম চিত্র—তিন ফুট বাই তিন ফুটের ঘরে দিনের পর দিন আটকে রাখার নিষ্ঠুরতা—মানুষের সামনে তুলে ধরার তাগিদ দেন।

কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কমিশনে এখন পর্যন্ত ১,৮৫০টি অভিযোগ জমা পড়েছে, যার মধ্যে ১,৩৫০টি যাচাই–বাছাই শেষ হয়েছে। অভিযোগের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখনো তিন শতাধিক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন।

কমিশনপ্রধান অনুরোধ করেন, নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবার যেন অন্তত ব্যাংকে লেনদেন করতে পারে—এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে। সাত বছরের স্থলে পাঁচ বছর পর নিখোঁজদের মৃত ধরে নেওয়ার আইনি সংশোধনেরও সুপারিশ করেন তিনি।

এক কমিশন সদস্য জানান, জড়িত অনেক কর্মকর্তাই অনুশোচনায় ভুগছেন এবং আত্মশুদ্ধির প্রয়াসে চিঠি লিখে যোগাযোগ করছেন। দুজন কর্মকর্তা লিখিতভাবে মুক্তি চেয়ে গণভবনে চিঠি জমা দিয়েছিলেন, যেটি তৎকালীন সেনাপ্রধান স্বীকারও করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আপনারা ভয়-হুমকি উপেক্ষা করে যে সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করছেন, তা দেশের মানুষের জন্য এক অনুপ্রেরণা।”