ঢাকা   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মুজিবনগর সরকারের নেতা-কর্মীদের নতুন স্বীকৃতি: ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ ও ‘সহযোগী’ দুই শ্রেণিতে ভাগ

মুজিবনগর সরকারের নেতা-কর্মীদের নতুন স্বীকৃতি: ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ ও ‘সহযোগী’ দুই শ্রেণিতে ভাগ

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গঠিত মুজিবনগর সরকারের সদস্যদের ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে নতুন সংজ্ঞা জারি করেছে সরকার। অন্যদিকে, যাঁরা সরাসরি রণাঙ্গনে না থেকেও সরকার গঠনে সহায়তা করেছিলেন, তাঁদের পরিচয় হবে ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’। এই সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার রাতে আইন মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) অধ্যাদেশ’-এ জানানো হয়।

অধ্যাদেশ অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, অর্থমন্ত্রী এম মনসুর আলী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচএম কামারুজ্জামানসহ মুজিবনগর সরকারের মূল নেতৃত্বধারীরা ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে চিহ্নিত হবেন। তবে, মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, দূত, চিকিৎসক, নার্স ও সহকারী কর্মীরা হবেন ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম জানান, কাউকে ‘বাতিল’ করা হয়নি, বরং বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা স্পষ্ট করে সংশোধন করা হয়েছে। তিনি বলেন, সরাসরি যাঁরা রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন, কেবল তাঁদের ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

এ নিয়ে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘মুজিবনগর সরকারের নেতাদের সার্টিফিকেট বাতিল’ শীর্ষক বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ালে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নিজের ফেসবুক পোস্টে তা ‘ফেইক নিউজ’ বলে দাবি করেন। তিনি অধ্যাদেশের স্ক্রিনশটসহ জানান, নেতাদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি অক্ষুণ্ন রয়েছে।

নতুন অধ্যাদেশে ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে ৫টি শ্রেণির লোকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে—
১. মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বিদেশে অবস্থান করে বিশ্বজনমত গঠনে ভূমিকা রাখা পেশাজীবী ও কর্মী,
২. মুজিবনগর সরকারের অধীনে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সহায়তাকারীরা,
৩. স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নেওয়া এমএনএ-এমপিএরা,
৪. স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও সাংবাদিকরা এবং
৫. স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড়রা।

এতদিন ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে পরিচিত স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যরাও এখন থেকে ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে গণ্য হবেন।

অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সময়কালে যারা প্রশিক্ষণ নিয়ে সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, তাঁরা এবং মুক্তিবাহিনী, পুলিশ, ইপিআর, আনসার, নৌ কমান্ডো ও মুজিবনগর সরকারের স্বীকৃত বাহিনীর সদস্যরাই ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে বিবেচিত হবেন।