ঢাকা   মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

চক্ষু হাসপাতালে অচলাবস্থা, ঈদের আগে হতাশায় রোগীরা

জাতীয়

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৭:৪১, ১ জুন ২০২৫

চক্ষু হাসপাতালে অচলাবস্থা, ঈদের আগে হতাশায় রোগীরা

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে টানা পাঁচ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে চিকিৎসাসেবা। আগারগাঁওয়ের এই বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানটিতে চিকিৎসক-কর্মচারীদের অনুপস্থিতির কারণে রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। বিশেষ করে ঈদের আগে যারা অস্ত্রোপচারের তারিখ পেয়েছিলেন বা মাঝপথে চিকিৎসাধীন ছিলেন, তারা হতাশায় দিশেহারা।

গত বুধবার হাসপাতালটিতে চিকিৎসক-কর্মচারীদের সঙ্গে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের সংঘর্ষের পর থেকেই কার্যত অচলাবস্থা চলছে। কেউ বলতে পারছে না, চিকিৎসাসেবা কবে শুরু হবে। রোগী ও স্বজনেরা প্রতিদিনই এসে চিকিৎসাসেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। আজ রোববারও এমন চিত্র দেখা গেছে।

সিরাজগঞ্জ থেকে ভাই রাশেদুল হাসানের চিকিৎসা করাতে আসা মিজানুর রহমান বলেন, ‘চিকিৎসা না করিয়ে ফিরলে আবার আসতে হবে। কিন্তু সামনে ঈদ, আর অপেক্ষা করতে পারছি না। বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।’

হাসপাতালের প্রধান ফটকে দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য আইনুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল ৮টার দিকে সবচেয়ে বেশি ভিড় হয়। কেউ বিশ্বাসই করতে চান না যে হাসপাতাল বন্ধ। ভেতরে গিয়ে দেখতে চান, পরে অনেক বুঝিয়ে ফেরত পাঠাতে হয়।’

২৫০ শয্যার এই বিশেষায়িত হাসপাতালে প্রতিদিন ১৫০-২০০টি অস্ত্রোপচার এবং ৩ হাজারের বেশি রোগী সেবা নিয়ে থাকেন। এখন সব বন্ধ। চাঁদপুরের মতলব থেকে ৭০ বছর বয়সী মায়ের চোখের চিকিৎসায় আসা অমল বিশ্বাস বলেন, ‘রোববার মায়ের অপারেশন হয়েছিল। আজ আবার দেখানোর কথা ছিল। এত কষ্ট করে এসে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে।’

হাসপাতালে ভর্তি থাকা ২৫-৩০ জন সাধারণ রোগী চিকিৎসা মাঝপথে রেখে কোথাও যেতে পারছেন না। পাশাপাশি ৬০-৭০ জন আহত ব্যক্তি এখনো হাসপাতালে অবস্থান করছেন। পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা কেউ কাজে ফিরছেন না।

অচলাবস্থা নিরসনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে। তারা আহতদের সঙ্গে আলোচনা করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সেবা ফের চালু করার চেষ্টা করছে। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জানে আলম বলেন, ‘সংকট নিরসনে এখনো অগ্রগতি নেই। কাছের হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা শেষ করতে বলা হয়েছে।’

এই স্থবিরতায় দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চক্ষু চিকিৎসা কেন্দ্র কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান না হলে সারা দেশ থেকেই আসা চোখের রোগীরা আরও বড় সংকটে পড়বেন।