ঢাকা   রোববার ০৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে চাঙা অর্থনীতি, কমেছে বৈদেশিক ঘাটতি

অর্থ ও বাণিজ্য

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৮:৩০, ৮ জুন ২০২৫

রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে চাঙা অর্থনীতি, কমেছে বৈদেশিক ঘাটতি

দেশের বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যে (ব্যালান্স অব পেমেন্টস - বিওপি) ঘাটতি দ্রুত হারে কমে আসছে, যা অর্থনীতির জন্য একটি বড় স্বস্তির বার্তা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) বিওপির ঘাটতি কমে দাঁড়িয়েছে ৬৬ কোটি ডলারে। আগের মাসে এই ঘাটতি ছিল ১০৭ কোটি ডলার, আর গত অর্থবছরে একই সময়ে তা ছিল ৫৫৭ কোটি ডলার।

বিওপির ঘাটতি হ্রাসের মূল উৎস হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে দুইটি খাত—পণ্য রপ্তানি ও প্রবাসী আয়। সদ্য প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ৬৫৭ কোটি ডলারের, যা গত বছরের তুলনায় ৮.৬১ শতাংশ বেশি। একই সময়ে প্রবাসী আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৫৪ কোটি ডলার, যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ২৮ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতিও কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ২০২৪ সালের ২৯ মে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব হিসাব অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২৫.৮০ বিলিয়ন ডলার, যেখানে গত বছর একই সময়ে ছিল ২৪.২২ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের বিপিএম ৬ পদ্ধতি অনুসারে বর্তমান রিজার্ভ ২০.৫৭ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১৮৫ কোটি ডলার বেশি।

চলতি হিসাব ভারসাম্যেও দেখা যাচ্ছে ইতিবাচক অগ্রগতি। যেখানে গত অর্থবছরের শেষে চলতি হিসাবের ঘাটতি ছিল ৬৬১ কোটি ডলার, সেখানে এবার তা নেমে এসেছে ১৩৯ কোটিতে। চলতি হিসাবের ঘাটতি কমায় অর্থনীতিতে বৈদেশিক ঋণের ওপর নির্ভরতা কমেছে।

অন্যদিকে, আর্থিক হিসাবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দিকে ঘাটতি থাকলেও, ১০ মাস শেষে ১৯৬ কোটি ডলারের উদ্বৃত্ত দেখা গেছে। ফলে রিজার্ভ ও বিনিময় হার চাপের মধ্যে না পড়ে স্থিতিশীল রয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রপ্তানি ও প্রবাসী আয় বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকলে সামনের মাসগুলোতে আরও স্থিতিশীলতা আসবে। বিশেষ করে মে মাসে রেমিট্যান্স এসেছে রেকর্ড পরিমাণে। একই সময় ডলারের বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ায় জোগান ও চাহিদা মিলিয়ে হারটিও রয়ে গেছে নিয়ন্ত্রণে।

সব মিলিয়ে বৈদেশিক লেনদেন ব্যবস্থায় ইতিবাচক গতি অর্থনীতিতে পুনরুজ্জীবনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।