ঢাকা   মঙ্গলবার ২০ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পুকুর নিয়ে দ্বন্দ্বে বিএনপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, পুঠিয়ায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি

পুকুর নিয়ে দ্বন্দ্বে বিএনপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, পুঠিয়ায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি

রাজশাহীর পুঠিয়ায় ছয়টি খাসপুকুরের ইজারা নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছে। এর জেরে বুধবার রাতে দলীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তরা কার্যালয়ের সামনে রাখা দুটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় এবং শহীদ জিয়া, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি, ব্যানার ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কার্যালয়ের সামনে পুড়ে যাওয়া মোটরসাইকেল পড়ে থাকতে দেখা গেছে। পুরো এলাকা জুড়ে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। নিরাপত্তা রক্ষায় দুই দিন ধরে উপজেলা সদরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

দলীয় সূত্র জানায়, পুকুর ইজারা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মন্ডল ও সাবেক পৌর মেয়র আল মামুন খানের অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। বুধবার মডেল স্কুলের পুকুরগুলোর উন্মুক্ত ডাকে দুই পক্ষই অংশ নেয়। ডাক চলাকালে উত্তেজনা বাড়ে এবং এক পর্যায়ে ফারুক রায়হানের নেতৃত্বে এক পক্ষ সমঝোতার চেষ্টা করলেও তা ব্যর্থ হয়।

ফারুক রায়হান অভিযোগ করেন, মামুনপন্থীরা পরিকল্পিতভাবে নিচে অবস্থান নিয়ে অস্ত্রসহ হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। পরিস্থিতি খারাপ দেখে ইউএনও সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

ঘটনার পরপরই রাতেই রাজবাড়ি বাজারে বিএনপি ও ছাত্রদলের কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। যদিও আল মামুন দাবি করেছেন, এসব ঘটনার সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই এবং তাঁকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করতেই এসব নাটক সাজানো হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, পুকুর ইজারায় অংশগ্রহণকারী দুই পক্ষই মরিয়া ছিল। ডাকের সময় উত্তেজনা বাড়ে এবং এক পক্ষ নিচে নেমে অপর পক্ষের ওপর হামলার পরিকল্পনা করে। সেনাবাহিনী এসে উত্তেজিত কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

পুঠিয়া থানার ওসি কবীর হোসেন জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও এলাকায় পুলিশের টহল অব্যাহত রয়েছে। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ করেনি।

ঘটনার জেরে পুঠিয়া এলাকায় এখনো আতঙ্ক ও উদ্বেগ বিরাজ করছে। রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের আগুন যেন সাধারণ মানুষের শান্ত পরিবেশকে বারবার না ঝলসে দেয়, এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।