
বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলে সাম্প্রতিক বিদ্রোহের রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন বিতর্কে জড়িয়েছে বাফুফে। অনুশীলন বর্জন ও কোচ বরখাস্তের দাবি তোলা ১৮ বিদ্রোহী ফুটবলারের মধ্য থেকে ১৩ জনের বেতন ৫ হাজার টাকা করে বাড়িয়ে ৫৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে ফেডারেশন। বিষয়টি জানাজানি হতেই ক্যাম্পে থাকা অন্য খেলোয়াড়দের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। অনেকে একে 'পুরস্কারমূলক পুরনো অভ্যাসে' ফিরে যাওয়া বলেও মন্তব্য করছেন।
জাতীয় দলের এক খেলোয়াড় নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "আমরা প্রতিদিন সকালে ঘুম বাদ দিয়ে অনুশীলন করি, ম্যাচ খেলি। অথচ বেতন বাড়ল তাঁদের, যারা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। টাকা আমাদেরও দরকার।" অনেকে আরও অভিযোগ করেছেন, এখনো ক্যাম্পে ‘সিনিয়র আপুরা’ ছোটদের মানসিকভাবে শাসন করে চলেছেন।
গত ৩০ জানুয়ারি কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে তিন পাতার অভিযোগ তুলে ধরেন সাবিনা খাতুনসহ কয়েকজন সিনিয়র ফুটবলার। তাঁরা কোচকে বরখাস্ত না করলে অনুশীলনে ফিরবেন না বলে জানিয়ে দেন এবং একযোগে অবসরের হুমকিও দেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাফুফে একাধিক বৈঠক করে, এমনকি সভাপতি পর্যন্ত মাঠে নামেন। একপর্যায়ে বিদ্রোহীদের বাদ দিয়ে ৩৬ জনের সঙ্গে চুক্তি করে অনুশীলন চালু রাখা হয়। পরে অবশ্য ধীরে ধীরে বিদ্রোহীরা ফিরতে শুরু করেন, এমনকি ভুটানে খেলতে যাওয়া ১০ জনকেও দলে ফিরিয়ে নেয় ফেডারেশন।
সবকিছু ছাপিয়ে এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে, বেতন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত। এই ১৩ জন হলেন সাবিনা খাতুন, সানজিদা আক্তার, রুপনা চাকমা, মনিকা চাকমা, ঋতুপর্ণা চাকমা, শিউলি আজিম, তহুরা খাতুন, শামসুন্নাহার (জুনিয়র ও সিনিয়র), নিলুফা ইয়াসমিন, মারিয়া মান্দা, কৃষ্ণা রানী এবং মাসুরা পারভীন।
নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, "হ্যাঁ, ১৩ জনের বেতন ৫ হাজার টাকা করে বেড়েছে। তবে বিস্তারিত বলব না, মিডিয়ায় ব্রিফ করব।"
বর্তমানে ক্যাম্পে আছেন ৪৫ জন নারী ফুটবলার। সংকট কাটিয়ে নারী ফুটবলে আলোর বার্তা আসতে না আসতেই ফের অসন্তোষের ঢেউ বইছে। বাফুফের এই সিদ্ধান্ত দলে বিভাজন তৈরি করবে কিনা, এখন সেটিই দেখার বিষয়।