
চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে যাওয়ার পর আবারও কিছুটা বেড়েছে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম। সোমবার ব্যাপক দরপতনের পর মঙ্গলবার সকালেই তেলের দামে সামান্য ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। মূলত ওপেক ও তাদের সহযোগী দেশগুলোর উৎপাদন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত এবং যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি নিয়ে চলমান অনিশ্চয়তা এই অস্থিরতার প্রধান কারণ।
ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচার্সের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০ সেন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ দশমিক ৩৩ ডলারে, আর ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) ক্রুডের দাম বেড়ে হয়েছে ৫৭ দশমিক ২৩ ডলার। সোমবার এ দুটি জাতের তেলই ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পর সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছিল। চলতি বছরে ইতোমধ্যেই তেলের দাম কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ওপেক ও সহযোগী আটটি দেশ জুন মাস পর্যন্ত প্রতিদিন মোট ৯ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে বাজারে অতিরিক্ত সরবরাহের আশঙ্কা আরও জোরালো হয়েছে। বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন, যদি সদস্য দেশগুলো উৎপাদন কোটা যথাযথভাবে না মানে, তবে ওপেকের স্বেচ্ছা উৎপাদন হ্রাসের পরিকল্পনা মুখ থুবড়ে পড়তে পারে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় তেল কোম্পানি ডায়মন্ড ব্যাক এনার্জি ২০২৫ সালে উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। এর পেছনে অন্যতম কারণ যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট অবশ্য আশাবাদী। তিনি জানান, কর হ্রাস ও নিয়মকানুন শিথিলের মাধ্যমে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে উঠছে, যা অর্থনীতিকে দীর্ঘমেয়াদে আরও শক্তিশালী করবে।
বুধবার ফেডারেল রিজার্ভের মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠকে নীতি সুদহার অপরিবর্তিত রাখার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে বার্কলেস ব্যাংক ২০২৫ সালের গড় তেলের দাম ৭০ ডলার এবং ২০২৬ সালের জন্য ৬২ ডলার নির্ধারণ করে পূর্বাভাস দিয়েছে। তাদের মতে, বিশ্ববাজারের সামনে এখন এক বন্ধুর পথ, যেখানে বাণিজ্য সংঘাত ও তেল উৎপাদন নীতির টানাপোড়েন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।