ঢাকা   শুক্রবার ০২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২

মেসির ছায়ায় নয়, নিজেই আলো: ১৭ বছরের লামিনে ইয়ামালের বিস্ফোরক উত্থান

খেলার জগৎ

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১১:৫১, ১ মে ২০২৫

মেসির ছায়ায় নয়, নিজেই আলো: ১৭ বছরের লামিনে ইয়ামালের বিস্ফোরক উত্থান

বার্সেলোনার আকাশে যেন নতুন এক নক্ষত্র উদয় হয়েছে—লামিনে ইয়ামাল। বয়স মাত্র ১৭, কিন্তু পারফরম্যান্সে পেছনে ফেলেছেন মেসি–রোনালদোর শুরুর দিনগুলো। টিএনটি স্পোর্টস যেমন বলেছে, তুলনার জন্য নয়, বরং বোঝানোর জন্যই সংখ্যাগুলো হাজির করা—রোনালদোর ১৭ বছর বয়সে ৫ গোল, মেসির ১ গোল, আর ইয়ামালের ২২ গোল ও ৩৩ অ্যাসিস্ট!

গত রাতে বার্সেলোনার এস্তাদি অলিম্পিক লুইস কোম্পানিসে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগের ৩–৩ গোলের উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে ইয়ামাল যেন ছিলেন আলাদা এক গল্পের নায়ক। তাঁর ১০০তম ম্যাচে যেভাবে মাঠ কাঁপিয়েছেন, তাতে মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। গোল করেছেন, ড্রিবল করেছেন, কাট–ইন করে ইন্টার ডিফেন্সকে একপ্রকার দিশেহারা করে দিয়েছেন।

ইয়ামালের গোলটি যেন ছিল পুরোনো দিনের সেই মেসির পুনরাবৃত্তি—ডান প্রান্ত থেকে দৌড়ে ঢুকে প্রতিপক্ষকে কাটিয়ে বাঁ পায়ে পোস্টে শট। ইন্টার গোলকিপার ইয়ান সোমার শুধু চেয়ে দেখেছেন। এমন নিখুঁত নিদর্শনগুলোই তাঁকে 'নতুন মেসি' বলার কারণ। তবে এ উপাধি বোধহয় যথেষ্ট নয়—কারণ ইয়ামাল নিজেই একটা আলাদা নাম হয়ে উঠছেন।

তাঁর খেলার প্রশংসায় পঞ্চমুখ ফুটবল দুনিয়া। রিও ফার্ডিনান্ড বললেন, “শীর্ষ পাঁচ লিগের যেকোনো খেলোয়াড়ের চেয়ে আলাদা এক স্তরের প্রতিভা ইয়ামাল।” হলান্ড তো সরাসরি লিখেছেন, “এই মানুষটি অবিশ্বাস্য।” এমনকি ইন্টার কোচ ইনজাগিও ম্যাচ শেষে বললেন, “৫০ বছরে এমন প্রতিভা একবার আসে। আজ আমি তার খেলায় মুগ্ধ।”

জেমি ক্যারাঘার বলেছেন, “যেন সেরা সময়ের মেসিকে দেখছি।” আর থিয়েরি অঁরি তো অবাক, “এই বয়সে এমন খেলা—এটা স্বাভাবিক নয়। তাঁর মধ্যে পরিপক্বতা যেন কাউকে ভর করেছে!”

পরিসংখ্যানে আরও স্পষ্ট ইয়ামালের প্রভাব—১৭ বছর ২৯১ দিনে চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে গোল করার ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় এখন তিনি, ভেঙেছেন এমবাপ্পের রেকর্ড। বার্সার হয়ে ১০০ ম্যাচে ৫৫টি গোল অবদানে তিনি অনেক আগেই ছাড়িয়ে গেছেন অনেক বড় নামকে।

কিন্তু পরিসংখ্যানের বাইরেও এক ব্যাপার পরিষ্কার—লামিনে ইয়ামাল ফুটবল খেলছেন হৃদয় দিয়ে, চোখে যেন আগুন, আর পায়ে মায়া। হয়তো এই জন্যই বার্সেলোনায় আবার বিশ্বাস ফিরে এসেছে—আলো এখনও আছে, মেসির ছায়ায় নয়, এবার নিজেই আলোর উৎস হয়ে উঠছে ইয়ামাল।