
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চামড়া খাতের কোম্পানি লিগ্যাসি ফুটওয়্যার লিমিটেডের শেয়ারদর ও লেনদেন সাম্প্রতিক সময়ে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে ডিএসই। তবে এ বাড়ার পেছনে তাদের কাছে অপ্রকাশিত কোনো মূল্যসংবেদনশীল তথ্য নেই বলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চিঠির জবাবে জানিয়েছে কোম্পানিটি। এর আগে আরো চারটি শেয়ারে বিনিয়োগের বিষয়ে এরকম সতর্কবার্তা দেওয়া হয়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১৯ মার্চের পর থেকেই ডিএসইতে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের শেয়ারদর। এদিন কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৪২ টাকা ৩০ পয়সা। সর্বশেষ ২৩ মার্চ বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬ টাকা ২০ পয়সায়। এ সময়ে মাত্র চার কার্যদিবসের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ১৩ টাকা ৯০ পয়সা বা ৩২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আলোচ্য সময়ের মধ্যে গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে। এদিন মোট ৫ লাখ ১১ হাজার ২৭০টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যেখানে কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছিল ১৪ লাখ টাকা।
এর আগে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রূপালী লাইফ এবং শ্যামপুর সুগার মিলস লিমিটেডের শেয়ারদরে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সতর্কবার্তা দেয় ডিএসই।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা যায়, কোম্পানি দুটির শেয়ার দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে সম্প্রতি ডিএসই কোম্পানি দুটির কর্তৃপক্ষকে নোটিশ পাঠায়। ডিএসইর চিঠির জবাবে কোম্পানি দুটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, কোনো রকম অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই কোম্পানি দুটির শেয়ার দর অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে।
রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ কোম্পানিটির শেয়ারের দর ছিল ৮৭ টাকা ৮০ পয়সায়। আর ১৫ মার্চ ২০২৩ কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ১১৮ টাকা ৬০ পয়সায়। এই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৩০ টাকা ৮০ পয়সা বা ৩৫.০৭ শতাংশ বেড়েছে। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে ১০৬ টাকা ১০ পয়সায়।
শ্যামপুর সুগার মিলসের গত ১ লা মার্চ ২০২৩ কোম্পানিটির শেয়ারের দর ছিল ৬৪ টাকা ১০ পয়সায়। আর ১৪ মার্চ ২০২৩ কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ৯০ টাকা ৮০ পয়সায়।
এই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর ২৬ টাকা ৭০ পয়সা বা ৪২ শতাংশ বেড়েছে। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে ৮৭ টাকা ৮০ পয়সায়।
অন্যদিকে আলহ্বাজ টেক্সটাইল এবং এডিএন টেলিকম লিমিটেডের শেয়ারদর অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে বলে সতর্ক করে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এজন্য কোম্পানি দুটির শেয়ারে বিনিয়োগের বিষয়ে সতর্কতা জারি করে ডিএসই।
কোম্পানি দুটির শেয়ার দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে সম্প্রতি ডিএসই কোম্পানি দুটির কর্তৃপক্ষকে নোটিশ পাঠায়।
ডিএসইর চিঠির জবাবে কোম্পানি দুটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, কোনো রকম অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই কোম্পানি দুটির শেয়ার দর অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে।
আলহ্বাজ টেক্সটাইল: গত ০৯ ফেব্রুয়ারি কোম্পানিটির শেয়ারের দর ছিল ১৩২ টাকা ৩০ পয়সা। গত ৯ মার্চ কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৩ টাকা ৭০ পয়সায়। অর্থাৎ একমাসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৪১ টাকা ৪০ পয়সা বা ৩১.২৯ শতাংশ।
৫০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের আলহাজ টেক্সটাইলের পরিশোধিত মূলধন ২২ কোটি টাকা। সর্বশেষ ২০২২ সালে সমাপ্ত অর্থবছরে মাত্র ৩ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি।
আলহাজ টেক্সটাইরের মোট শেয়ারের মাত্র ২৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে কোম্পানির পর্ষদের কাছে। অর্থাৎ সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ারও নেই। আর ১৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ও ৫৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে।
এডিএন টেলিকম: গত ০২ জানুয়ারি কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ১০৪ টাকা ৯০ পয়সায়। গত ৯ মার্চ কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে দাঁড়েয়েছে ১৬৬ টাকা ৫০ পয়সায়। অর্থাৎ দুই মাসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৬১ টাকা ৬০ পয়সা বা ৫৮.৭২ শতাংশ।
২০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের এই কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৬৪ কোটি টাকা। এডিএন টেলিকম ২০২২ সমাপ্ত অর্থবছরে ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।
কোম্পানির মোট শেয়ারের ৪৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে, ১৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে, ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে ও ২৮ দশমিক ৯০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে।
গত কয়েক মাস ধরেই পুঁজিবাজারে মন্দা চলছে। ভয়বহ দরপতন ঠেকাতে অধিকাংশ শেয়ারে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে বিএসইসি। এর ফলে শেয়ার হাতবদল না হওয়ায় লেনদেন নেমে এসেছে তলানিতে। গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএসইতে মাত্র ২৮৬ কোটি টাকার লেনদেন হয়।
শেয়ার বিজনেস24.কম