ঢাকা   শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

বিদেশে নারী কর্মীর সংখ্যা হ্রাসের ধারা: নির্যাতন-প্রলোভনের গল্প

নারী ও নারী উদ্যোক্তা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৪:১৬, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫

বিদেশে নারী কর্মীর সংখ্যা হ্রাসের ধারা: নির্যাতন-প্রলোভনের গল্প

বিদেশে নারী কর্মসংস্থানের মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো, যেখানে অধিকাংশ নারী গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতে যেতেন। কিন্তু নানা নির্যাতন, যৌন নিপীড়ন, এবং কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে দেশে ফিরে আসছেন অনেকেই। ফলে, বিদেশে নারীদের কর্মসংস্থান উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্যে দেখা যায়, ২০২২ সালে ১ লাখ ৫ হাজার ৪৬৬ জন নারী কর্মী বিদেশে গিয়েছিলেন। এই সংখ্যা ২০২৩ সালে ৭৬ হাজার ১০৮ জনে নেমে আসে এবং ২০২৪ সালে আরও কমে ৬১ হাজার ১৫৮ জনে পৌঁছায়। তিন বছরের ব্যবধানে প্রায় ৪২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে নারী কর্মসংস্থান।

মানিকগঞ্জের ফিরোজা এবং ফরিদপুরের শাহিদা বেগমের মতো অনেকেই নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। প্রথম বছর নিয়মিত বেতন পেলেও পরে টানা ১১ মাস বেতন না পাওয়ার মতো অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরেছেন ফিরোজা। অন্যদিকে, শাহিদা বেগম পায়ের চোটের পরেও কোনো চিকিৎসা পাননি এবং বেতন থেকেও কেটে নেওয়া হয়েছে। এমন অবস্থা তাদের মনে স্থায়ী ক্ষত তৈরি করেছে।

বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক ও ওকাপের মতো সংগঠনগুলো দেশে ফিরে আসা নারী কর্মীদের নানা অভিযোগ নিয়ে কাজ করছে। মিথ্যা কথা বলে নিয়ে যাওয়া, একাধিক বাসায় কাজ করানো, ১৪-১৬ ঘণ্টা কাজ, কম বেতন, এবং নিয়মিত খাবার না দেওয়া—এসব অভিযোগ নিত্যদিনের। উপরন্তু, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং আত্মহত্যার ঘটনা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।

ওকাপের চেয়ারপারসন শাকিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, গৃহকর্মী ছাড়া নারীদের জন্য তেমন কোনো কর্মক্ষেত্র তৈরি হয়নি। নারীরা নিয়মিত নিপীড়নের শিকার হওয়ায় এই পেশায় তাদের আগ্রহও কমে গেছে। এই অবস্থার পরিবর্তনে প্রয়োজন সচেতনতা ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

শেয়ার বিজনেস24.কম