
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি মেট্রো স্পিনিং লিমিটেডের কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম এক বছর বন্ধ থাকবে। মূলত কারখানার ভবন পুনর্নির্মাণ, যন্ত্রপাতি স্থাপন ও পরীক্ষামূলক উৎপাদনের জন্য কারখানার কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। গতকাল স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে কোম্পানিটি।
জানা যায়, কোম্পানিটি মনে করছে, এক বছরের মধ্যেই কারখানায় বিএমআরই (ভারসাম্য, আধুনিকায়ন, প্রতিস্থাপন ও সম্প্রসারণ) সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। কিছুসংখ্যক পুরনো যন্ত্রপাতি খুলে ফেলার পর বিক্রি করে দেয়া হবে। বিএমআরই বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও কারখানায় বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর বিষয়টি বিনিয়োগকারী ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে সময়মতো জানানো হবে। বিএমআরই সম্পন্নের পর কারখানার বিদ্যমান সক্ষমতা ১১০ শতাংশ বাড়বে এবং সে অনুসারে কোম্পানিটির আয় ও মুনাফাও বাড়বে।
গত মাসে স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে মেট্রো স্পিনিং জানিয়েছিল, কারখানার বিএমআরই প্রকল্পের অধীনে অত্যাধুনিক মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়েছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ২৪ হাজার স্পিন্ডলস স্বয়ংক্রিয় মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি করে সেগুলো বিদ্যমান পুরনো যন্ত্রপাতির স্থলে প্রতিস্থাপন করা হবে। ২০২১ সালের ১১ অক্টোবর এক মূল্যসংবেদনশীল তথ্যের মাধ্যমে কোম্পানিটি জানিয়েছিল, তারা বিএমআরই প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এ প্রকল্পের অধীনেই এসব যন্ত্রপাতি আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এসব যন্ত্রপাতি স্থাপনের পর কোম্পানিটির মোট স্পিন্ডলস সক্ষমতা বেড়ে দাঁড়াবে ৩৫ হাজার ৫২০-এ। এ প্রকল্পের মাধ্যমে কোম্পানিটি কৃত্রিম তন্তু (এমএমএফ) সুতার পাশাপাশি তুলার সুতাসহ সব ধরনের সুতা উৎপাদনে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৯৮ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৮৫ পয়সা। আর সর্বশেষ দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৪৭ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৪৫ পয়সা। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২০ টাকা ৯৭ পয়সায়।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরের জন্য মোট ৮ শতাংশ লভ্যাংশের সুপারিশ করেছিল মেট্রো স্পিনিংয়ের পর্ষদ। এর মধ্যে ঘোষিত ৩ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ এরই মধ্যে শেয়ারহোল্ডারদের কাছে পাঠিয়েছে কোম্পানিটি। তবে ঘোষিত ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশে অসম্মতি জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৩৮ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৯৯ পয়সা। গত বছরের ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ২০ টাকা ৬৫ পয়সায়, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ১৮ টাকা ৩৬ পয়সা।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি মেট্রো স্পিনিং। মূলত আলোচ্য হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশের ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু বিএসইসি সে লভ্যাংশেও অনুমোদন দেয়নি। ফলে আলোচ্য হিসাব বছরের জন্য বিনিয়োগকারীরা কোনো লভ্যাংশ পাননি। ২০১৯-২০ হিসাব বছরে ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি। আগের হিসাব বছরেও একই হারে নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা। এছাড়া ২০১৭-১৮ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ২ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি।
শেয়ার বিজনেস24.কম