
যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বনেতাদের অংশগ্রহণে আয়োজিত ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তার একমাত্র কন্যা ব্যারিস্টার জায়মা জারনাজ রহমান। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনীতির অঙ্গনে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে—তাহলে কি বিএনপির রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে?
রাজনীতিতে অভিষেকের আভাস?
দল ও জায়মা রহমানের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা না এলেও, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকে সরাসরি রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়া বলা যাবে না। তবে, জিয়া পরিবারের উত্তরাধিকার হিসেবে তিনি ভবিষ্যতে বিএনপির নেতৃত্বে আসতে পারেন—এমন সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
পারিবারিক রাজনীতির ধারাবাহিকতা
ভারতীয় উপমহাদেশে পারিবারিক রাজনীতির দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে, যেখানে পরিবার থেকেই রাজনীতির নেতৃত্ব গড়ে ওঠে। জিয়াউর রহমানের পর খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান রাজনীতিতে এসেছেন, আর এখন আলোচনার কেন্দ্রে জায়মা রহমান।
বিশ্বমঞ্চে অভিষেকের তাৎপর্য
মার্কিন কংগ্রেসের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ শুধুমাত্র ধর্মীয় আয়োজন নয়, এটি রাজনৈতিক অভিজাতদের মিলনমেলা। স্বয়ং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এতে উপস্থিত থাকেন। সুতরাং, এমন একটি অনুষ্ঠানে জায়মা রহমানের অংশগ্রহণ নিছক প্রতিনিধিত্বের চেয়েও বেশি কিছু বোঝাতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, রাজনীতির পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্যই হয়তো তাকে এই গুরুত্বপূর্ণ আয়োজনে পাঠানো হয়েছে।
তরুণ নেতৃত্বের নতুন দিগন্ত?
বিএনপির তরুণ নেতারা বলছেন, জায়মা রহমানের এই অংশগ্রহণ দলীয় রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না বলেছেন, “তিনি শুধু তারেক রহমানের প্রতিনিধিত্ব করেননি, বরং বাংলাদেশের তরুণদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।”
রাজনীতিতে আসার সম্ভাবনা কতটা?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বীর আহমেদের মতে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উপস্থিতির মাধ্যমে জায়মা রহমান ভবিষ্যতে রাজনীতিতে আসবেন, এমন ইঙ্গিতই মিলছে। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদও মনে করেন, এটি দলীয় রাজনীতিতে নতুন বার্তা বহন করছে।
মার্কিন নেত্রীর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক
যুক্তরাষ্ট্রের উইমেন্স ফেলোশিপ ফাউন্ডেশনের নেত্রী রেবেকা ওয়াগনারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জায়মা রহমান। সেখানে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক, পারস্পরিক সহযোগিতা এবং বৈশ্বিক শান্তি ও সমৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিএনপির মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি কেবলই একটি সৌজন্যমূলক বৈঠক, তবে রাজনৈতিক গুরুত্বও বহন করছে।
নতুন দিনের অপেক্ষা
রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম হলেও জায়মা রহমান এখনো সরাসরি রাজনীতিতে আসেননি। তবে, তার যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে বিএনপির নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে আসবেন কি না, তা সময়ই বলে দেবে। তবে ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’-এ তার অংশগ্রহণকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে, যা ভবিষ্যতের সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে।
শেয়ার বিজনেস24.কম