ঢাকা   বৃহস্পতিবার ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২

কঠোর নীতির বিরুদ্ধে রাস্তায় বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ

কঠোর নীতির বিরুদ্ধে রাস্তায় বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন দুই খসড়া নীতিমালা—‘মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালা ২০২৫’ ও ‘মার্জিন বিধিমালা ২০২৫’—এর বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা। বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে পুরাতন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ভবনের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন তারা।

মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগকারী ঐক্য ফ্রন্ট ও বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টরস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে শত শত বিনিয়োগকারী অংশ নেন। হাতে প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে তারা বিএসইসি’র সাম্প্রতিক নীতিমালার বিরুদ্ধে স্লোগান দেন এবং সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনার আগেই বিধিমালা চূড়ান্ত না করার আহ্বান জানান।

বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, বিএসইসি একতরফা ও কঠোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যা শেয়ারবাজারে অস্থিরতা ও আতঙ্ক বাড়াচ্ছে। তাদের ভাষায়, নতুন খসড়া বিধিমালায় এমন সব শর্ত রাখা হয়েছে যা মিউচুয়াল ফান্ড খাত ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগকারী ঐক্য ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক জহুরুল হক জুয়েল বলেন, “বিএসইসি বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতা উপেক্ষা করে ধারাবাহিকভাবে কঠোর নীতি নিচ্ছে। এসব সিদ্ধান্তের ফলে বাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকার মূলধন উধাও হয়ে গেছে, অনেক বিনিয়োগকারী দেউলিয়া হওয়ার পথে।”

একজন ক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারী বলেন, “দুই বছর ধরে আমরা কোনো ডিভিডেন্ড পাচ্ছি না। তার ওপর কমিশন এখন আমাদের ফান্ড জোর করে বন্ধ করতে চাইছে—যা অন্যায় এবং বিনিয়োগকারীর অধিকারে হস্তক্ষেপ।”

মার্জিন বিধিমালা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, মার্জিন ঋণ কেবল ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ারে সীমিত করা হয়েছে, এবং শেয়ার ‘বি’ বা ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নামলে তা জোরপূর্বক বিক্রির বাধ্যবাধকতা থাকছে। বিনিয়োগকারীদের আশঙ্কা, এ নীতি বাস্তবায়িত হলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী ও ব্রোকারেজ হাউস উভয়ই বড় ঝুঁকিতে পড়বে।

বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টরস অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক শেখ মেহেদী ফারহান বলেন, “সংস্কারের নামে বিএসইসি কিছু কর্মকর্তা এমন সব নীতি আনছেন যা বাজারকে আরও দুর্বল করবে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার নামে আসলে নিজেদের অবস্থান শক্ত করছে তারা।”

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মানিক বলেন, “খসড়া মার্জিন রুলসে শুভংকরের ফাঁকি আছে। এর কারণে বড় বিনিয়োগকারীরা ইতিমধ্যেই শেয়ার বিক্রি করে বাজার থেকে সরে যাচ্ছেন।”

শেষে বিক্ষোভকারীরা বিএসইসি’র বিতর্কিত বিধিমালা পুনর্বিবেচনার দাবি জানান এবং বিনিয়োগকারীদের মতামত নিয়ে নতুন নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়ে কর্মসূচি শেষ করেন।