
শেয়ারবাজারে ছড়িয়ে পড়া গুজব ও আতঙ্কের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কমিশন জানিয়েছে, মার্জিন ঋণ সংক্রান্ত সংশোধিত বিধিমালা নিয়ে যেসব গুজব বাজারে ছড়ানো হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। একটি স্বার্থান্বেষী মহল ইচ্ছাকৃতভাবে এসব গুজব ছড়িয়ে বাজারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বলে কমিশনের দাবি।
গত সপ্তাহে এই গুজবের প্রভাবে শেয়ারবাজারে দেখা দেয় টানা দরপতন। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ডিএসইএক্স সূচক ৭৫ পয়েন্ট কমে যায়, যদিও পরদিন সোমবার সূচক ৬৭ পয়েন্ট পুনরুদ্ধার করে, যা বাজারে আস্থার ফেরার ইঙ্গিত দেয়।
সোমবার (২০ অক্টোবর) বিএসইসি-এর পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম বলেন, “নতুন মার্জিন ঋণ বিধিমালার খসড়া প্রণয়নের সময় শেয়ারবাজারের সব অংশীজনের মতামত ও সুপারিশ বিবেচনা করা হয়েছে। বর্তমানে এটি চূড়ান্তকরণের পর্যায়ে আছে।”
তিনি আরও বলেন, “বিধিমালা অনুমোদনের পর বাজারের অংশীজনদের মানিয়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় দেওয়া হবে। কোনো বিনিয়োগকারী বা ব্রোকারকে ঝুঁকির মুখে ফেলা হবে না।”
কমিশনের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, নতুন বিধিমালাটি বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যালোচনায় রয়েছে। টাস্কফোর্স ও সংশ্লিষ্ট পক্ষের মতামত নেওয়ার পর এটি অনুমোদনের জন্য কমিশনে উপস্থাপন করা হবে। অনুমোদনের পর ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত ট্রানজিশন সময় দেওয়া হতে পারে, যাতে বাজারে কোনো ধাক্কা না লাগে।
আবুল কালাম আরও সতর্ক করে বলেন, “যে মহল গুজব ছড়িয়ে বাজারে বিভ্রান্তি তৈরি করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি জানান, বিধিমালা প্রণয়নে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যদিও বাস্তবায়নযোগ্য নয় এমন কিছু সুপারিশ বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিএসইসি মুখপাত্রের ভাষায়, “শেয়ারবাজারে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও আস্থা ফিরিয়ে আনার দিকেই আমাদের জোর। বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কমিশন সর্বোচ্চ দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করছে।”
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বিএসইসি’র এই আশ্বাস স্বল্পমেয়াদে বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করবে। তবে তারা মনে করছেন, বিনিয়োগকারীদের স্বচ্ছ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করলেই বাজারের স্থিতিশীলতা টেকসই হবে।