লেনদেন বেড়েছে আট খাতে
বিদায়ী সপ্তাহে (২৪-২৯ মে) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আগের সপ্তাহগুলোর মতো পতন হয়েছে। আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইর সবগুলো সূচকের পাশাপাশি টাকার অংকে লেনদেনও কমেছে।
তবে এর মধ্যেও সপ্তাহজুড়ে টাকার অংকে লেনদেন বেড়েছে ৮ খাতে। খাতগুলো হলো- ভ্রমণ ও অবকাশ, সিরামিকস, প্রকৌশল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, পাট, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, টেলিকমিউনিকেশন এবং বস্ত্র খাত।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, বিদায়ী সপ্তাহে টাকার অংকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন বেড়েছে ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে। গত সপ্তাহে এই খাতে লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ৮৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৩ কোটি ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকার। সপ্তাহের ব্যবধানে খাতটিতে লেনদেন বেড়েছে ১ কোটি ৬৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা বা ৫৪ শতাংশ।
এরপর লেনদেনে এগিয়ে রয়েছে সিরামিকস খাতে। বিদায়ী সপ্তাহে এই খাতে লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ৩৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৭ কোটি ৮৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ২ কোটি ৫৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা বা ৩২.৪২ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে প্রকৌশল খাতে। বিদায়ী সপ্তাহে এই খাতে লেনদেন হয়েছে ২৫ কোটি ৫৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২০ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ৪ কোটি ৭৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা বা ২২.৮৩ শতাংশ।
লেনদেনে অগ্রসর হওয়া অন্য খাতগুলোর মধ্যে- বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৩ কোটি ২২ লাখ ১০ হাজার টাকা বা ১৬.৩৮ শতাংশ, পাট খাতে ৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা বা ১৫.৪৪ শতাংশ, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা বা ৫.৫৩ শতাংশ, টেলিকমিউনিকেশন খাতে ২০ লাখ ৯০ হাজার টাকা বা ৫.১৪ শতাংশ এবং বস্ত্র খাতে ৪৩ লাখ টাকা বা ১.৭৭ শতাংশ লেনদেন বেড়েছে।
ব্লক মার্কেটে ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ারের দাপট
বিদায়ী সপ্তাহে (২৪-২৯ মে) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে দাপট দেখিয়েছে ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ার। আলোচ্য সপ্তাহে ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯টিই ছিল ‘এ’ ক্যাটাগরির।
কোম্পানি ৯টি হলো- ফাইন ফুডস, ইস্টার্ন ব্যাংক, গ্রামীণ ফোন, এসইএমএল লেকচার ফান্ড, লাভেলো আইস্ক্রিম, রিলায়েন্স ওয়ান, এনসিসি ব্যাংক, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো এবং ওরিয়ন ইনফিউশন।
ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সপ্তাহজুড়ে আলোচ্য ৯ কোম্পানির ৫১ কোটি ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ফাইন ফুডসের। কোম্পানিটির ২২ কোটি ৭ লাখ ৩০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ইস্টার্ন ব্যাংকের। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৭২ লাখ ১০ হাজার টাকার এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ গ্রামীণ ফোনের ৩ কোটি ৯১ লাখ ৬০ হাজার টাকার।
সপ্তাহের ব্লক মার্কেটে শীর্ষ অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে- এসএমই লেকচার ফান্ডের ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা, লাভেলো আইস্ক্রিমের ৩ কোটি ৫৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, রিলায়েন্স ওয়ানের ৩ কোটি ২৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা, এনসিসি ব্যাংকের ৩ কোটি ৯ লাখ টাকা, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকোর ২ কোটি ৭১ লাখ টাকা এবং ওরিয়ন ইনফিউশনের ২ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
বাজার মূলধনে বড় ধাক্কা
বিদায়ী সপ্তাহে (২৪ মে থেকে ২৯ মে পর্যন্ত) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন, সূচক এবং বাজার মূলধনের প্রতিটিতেই নেতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।
ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, আলোচ্য সপ্তাহে মোট ১,৫৮১ কোটি ৩১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগের সপ্তাহের ১,৭২১ কোটি ৮০ লাখ টাকার তুলনায় ১৪০ কোটি ৪৯ লাখ টাকা কম।
সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৪৯ হাজার ৮৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। সপ্তাহ শেষে সেটি নেমে এসেছে ৬ লাখ ৪৬ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকায়। ফলে এক সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছে প্রায় ২ হাজার ১০৫ কোটি টাকা।
সূচকগুলোর দিক থেকেও সপ্তাহটি ছিল হতাশাজনক। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এক সপ্তাহে ১৪৭.২০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪,৬৩৭ পয়েন্টে। পাশাপাশি ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে ৪৭.৪৭ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস (শরীয়াহ সূচক) কমেছে ৩৫.৫৪ পয়েন্ট।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট ৩৯৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নেয়। এর মধ্যে ৬৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর বেড়েছে, ২৪টির দর অপরিবর্তিত ছিল এবং ৩০৩টি কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে।
ডিএসইতে পিই রেশিও কমেছে
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে (২৪-২৯মে) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) কমেছে। আলোচ্য এ সময়ে ডিএসইর পিই রেশিও কমেছে ৪ শতাংশ।
ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য মতে, বিদায়ী সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ৯.১৭ পয়েন্টে। আর সপ্তাহ শেষে পিই রেশিও অবস্থান করছে ৮.৮৩ পয়েন্টে। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর পিই রেশিও ০.৩৪ পয়েন্ট বা ৪ শতাংশ কমেছে।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে মিডল্যান্ড ব্যাংক
বিদায়ী সপ্তাহে (২৪-২৯ মে) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাপ্তাহিক সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে মিডল্যান্ড ব্যাংকের। ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় এ তথ্য জানা গেছে।
সপ্তাহজুড়ে মিডল্যান্ড ব্যাংকের দর বেড়েছে ১৩.৩৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে প্রতিষ্ঠানটির দর ছিল ২৩ টাকা ৯০ পয়সা। বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে যার ক্লোজিং দর দাঁড়িয়েছে ২৭ টাকা ১০ পয়সায়। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটির দর বেড়েছে ৩ টাকা ২০ পয়সা।
সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট। আগের সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে প্রতিষ্ঠানটির দর ছিল ২০৩ টাকা ৯০ পয়সা। বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ক্লোজিং দর দাঁড়িয়েছে ২২৮ টাকা ১০ পয়সায়। সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ২৪ টাকা ২০ পয়সা বা ১১.৮৭ শতাংশ।
দর বৃদ্ধির তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে নাহি অ্যালুমিনিয়াম। আগের সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে প্রতিষ্ঠানটির দর ছিল ১৮ টাকা ৩০ পয়সা। বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে যার ক্লোজিং দর দাঁড়িয়েছে ২০ টাকা ৪০ পয়সায়। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটির দর বেড়েছে ২ টাকা ১০ পয়সা বা ১১.৪৮ শতাংশ।
সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে এসআলম কোল্ড রোল্ডের ৯.৭৪ শতাংশ, আইসিবির ৯.৬৪ শতাংশ, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টের ৮.৬৪ শতাংশ, এটলাস বিডির ৮.৬৪ শতাংশ, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের ৭.৬৪ শতাংশ, ফারইস্ট ফ্যান্সের ৭.৩২ শতাংশ এবং রেনউইক যজেনশ্বরের ৭.০৭ শতাংশ।
দর পতনের শীর্ষে সিটি ব্যাংক
বিদায়ী সপ্তাহে (২৪-২৯ মে) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষ তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে সিটি ব্যাংকের।
ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় এ তথ্য জানা গেছে।
সপ্তাহজুড়ে সিটি ব্যাংকের দর কমেছে ২১.০৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে কোম্পানিটির দর ছিল ২২ টাকা ৮০ পয়সা। বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে যার ক্লোজিং দর দাঁড়িয়েছে ১৮ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির দর কমেছে ৪ টাকা ৮০ পয়সা।
সাপ্তাহিক দরপতনের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংক। আগের সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে প্রতিষ্ঠানটির দর ছিল ২১ টাকা ২০ পয়সা। বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ক্লোজিং দর দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটির দর কমেছে ৪ টাকা ২০ পয়সা বা ১৯.৮১ শতাংশ।
পতনের তালিকার তৃতীয় স্থানে ১৭.৭৮ শতাংশ দর কমে স্থান নিয়েছে ব্যাংক এশিয়া। আগের সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে কোম্পানিটির দর ছিল ১৮ টাকা। বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে যার ক্লোজিং দর দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা ৮০ পয়সায়। সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির দর কমেছে ৩ টাকা ২০ পয়সা।
এছাড়া, সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর কমেছে বে-লিজিংয়ের ১৬.৯৮ শতাংশ, দেশ ইন্স্যুরেন্সের ১৬.৪৭ শতাংশ, এসএমইএএলইসি মিউচুয়াল ফান্ডের ১৬ শতাংশ, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ১৫.৮৫ শতাংশ, পূবালী ব্যাংকের ১৫.৪৪ শতাংশ, এনআরবি ব্যাংকের ১৫.৩২ শতাংশ এবং ইসলামিক ফাইন্যান্সের ১৪.৬১ শতাংশ।
লেনদেনের শীর্ষে মিডল্যান্ড ব্যাংক
বিদায়ী সপ্তাহে (২৪-২৯ মে) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষ তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে মিডল্যান্ড ব্যাংক। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৭৮ লাখ টাকার। যা ছিল ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪.৪৭ শতাংশ। ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় এ তথ্য জানা গেছে।
লেনদেন তলিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিচ হ্যাচারি। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে ৮ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৩.১২ শতাংশ।
সাপ্তাহিক লেনদেন তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে শাইনপুকুর সিরামিকস। সপ্তাহজুড়ে প্রতিদিন গড়ে কোম্পানিটির ৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ২.৯৪ শতাংশ।
এছাড়া, সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ফাইন ফুডের ৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা, ব্র্যাক ব্যাংকের ৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, বারাকা পতেঙ্গার ৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা, স্কয়ার ফার্মার ৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা, এসআলম কোল্ড রোল্ডের ৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা, এনআবি ব্যাংকের ৫ কোটি ২২ লাখ টাকা এবং ওরিয়ন ইনফিউশনের ৫ কোটি ০৭ লাখ টাকার শেয়ার।
