
ইরানের ধারাবাহিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার মুখে ইসরায়েলের দূরপাল্লার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অস্ত্র মজুতে টান পড়তে শুরু করেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইরানি হামলা প্রতিহত করতে ব্যবহৃত ইসরায়েলের ‘অ্যারো’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ইন্টারসেপ্টর বা ধ্বংসকারী ক্ষেপণাস্ত্র প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। তবে এই তথ্য ‘বাস্তবতার সঙ্গে মিল নেই’ বলে তা নাকচ করে দিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
গত শুক্রবার ভোরে ইরানকে লক্ষ্য করে নজিরবিহীন হামলা শুরু করে ইসরায়েল। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় গত কয়েক দিনে অন্তত ১১ দফায় শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছুড়েছে ইরান। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই ধ্বংস করা হয়েছে।
নেতানিয়াহুর দপ্তর জানায়, তেহরান এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের দিকে ৪০০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে এবং কয়েক শ ড্রোন পাঠিয়েছে। এই চাপ মোকাবিলায় Arrow-3 সিস্টেম, David’s Sling, বিখ্যাত Iron Dome এবং যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার ব্যবহার করছে ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রও সরাসরি সহায়তা করছে থাড ও প্যাট্রিয়ট প্যাক-২ ব্যবস্থার মাধ্যমে।
তবে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর দাবি, তারা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত। অস্ত্র মজুত নিয়ে মন্তব্য না করলেও তারা আশ্বস্ত করেছে যে বর্তমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় রয়েছে।
মিসাইল বিশেষজ্ঞ টম কারাকো বলেন, ‘ইসরায়েলি ও তাদের মিত্রদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ, বসে বসে প্রতিরক্ষা খেলা চালিয়ে যাওয়া বাস্তবসম্মত নয়।’
এদিকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পাল্টা জবাবে ইসরায়েলও আঘাত হেনেছে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন ও সংরক্ষণ স্থাপনাগুলোয়। গত মঙ্গলবার ইরানের অন্তত ১২টি ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চিং ও গুদামঘরে সফল হামলার কথা জানিয়েছে ইসরায়েল। অন্যদিকে, ইরানও দাবি করেছে যে তারা মোসাদের একটি ড্রোন কারখানা ধ্বংস করেছে, যা তেহরানের কাছাকাছি অবস্থিত ছিল।
এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা আরও গভীর হয়ে উঠেছে। আর অস্ত্রের মজুত কমে আসা ও যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণ এই সংঘাতকে মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে ছড়িয়ে দেওয়ার আশঙ্কাও তৈরি করছে।