ঢাকা   মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

’বাংলাদেশি’ বলে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা, ভারতীয় চার শ্রমিক উদ্ধার

বিশেষ প্রতিবেদন

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৭:৪২, ১৬ জুন ২০২৫

’বাংলাদেশি’ বলে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা, ভারতীয় চার শ্রমিক উদ্ধার

বাংলাদেশি পরিচয়ে ভারতের চার পরিযায়ী শ্রমিককে জোর করে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পাঠাতে চেয়েছিল বিএসএফ। তবে শেষ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের তৎপরতায় তাঁদের উদ্ধার করে ফের আনা হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।

পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদের ওই চার মুসলিম শ্রমিক মুম্বাইয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। সম্প্রতি মহারাষ্ট্র পুলিশ তাঁদের বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করে বিএসএফের হাতে তুলে দেয়। এরপর কোনো যাচাই ছাড়াই বিএসএফ তাঁদের কোচবিহারের সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায়। তবে বিজিবির হাতে হস্তান্তরের পর, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের চাপের মুখে ওই শ্রমিকদের ফেরত নেয় বিএসএফ।

চারজনের মধ্যে তিনজন মুর্শিদাবাদের—নাজিমুদ্দিন মণ্ডল, মেহবুব শেখ ও মিনারুল শেখ। অপরজন মোস্তাফা কামাল, পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দা। বৈধ পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও তাঁদের বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করার অভিযোগ উঠেছে।

জিরো পয়েন্টে আটকে পড়া শ্রমিকরা স্থানীয়দের সহায়তায় মোবাইলে ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে নিজেদের দুর্দশার কথা জানান। এরপর পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পরিষদের চেয়ারম্যান ও রাজ্যসভার সদস্য সামিরুল ইসলাম, হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখসহ স্থানীয় নেতারা উদ্যোগ নিয়ে তাঁদের ফেরানোর চেষ্টা শুরু করেন।

নাজিমুদ্দিনের স্ত্রী পিংকি বিবি নিজে বিধায়কের কাছে গিয়ে তাঁর বৈধ পরিচয়পত্র তুলে দেন। রাজ্য প্রশাসন তা বিএসএফ ও পুলিশকে পাঠায়।

বিধায়ক নিয়ামত শেখ বলেন, “নাজিমুদ্দিনসহ চারজন ভারতীয় নাগরিক। তাঁদের যথাযথ কাগজপত্র রয়েছে। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী বেআইনিভাবে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে।”

এ বিষয়ে রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিএসএফ ও রাজ্য পুলিশ যৌথভাবে যাচাইয়ের পর তাঁদের বিজিবি থেকে ফেরত নেয়। বর্তমানে তাঁদের কোচবিহার পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং খুব শিগগিরই নিজ নিজ জেলায় পাঠানো হবে।

এদিকে শুধু শ্রমিক নয়, পাসপোর্ট নবায়নে ভোগান্তির অভিযোগও উঠেছে। দিল্লির এক অধ্যাপিকা অভিযোগ করেন, তিনি ২০০৭ সালের পাসপোর্ট নবায়ন করতে গিয়ে চারবার ব্যর্থ হয়েছেন। পুলিশ তাঁকে জানিয়েছে, “এখানে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ বেড়েছে, তাই নবায়নে কড়াকড়ি চলছে।”

সব মিলিয়ে বাঙালি পরিচয়ে ভারতের নাগরিকদের হয়রানি ও 'বাংলাদেশি' তকমা দিয়ে ঠেলে দেওয়ার প্রবণতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গজুড়ে।