
ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও প্রাণহানি তুলনামূলক কম। কারণ হিসেবে উঠে এসেছে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর সতর্কতা ব্যবস্থা, বোমা প্রতিরোধী স্থাপনা এবং সচেতন নাগরিক উদ্যোগ। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর 'হোম ফ্রন্ট কমান্ড অ্যাপ'-এর মাধ্যমে আঘাত হানার ১৫ থেকে ৩০ মিনিট আগেই নাগরিকদের মুঠোফোনে বার্তা পৌঁছে যাচ্ছে। ফলে তারা দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যেতে পারছেন।
এই ডিজিটাল সতর্কবার্তার পাশাপাশি ঘরে ঘরে থাকা বোমাশেল্টার কিংবা প্রতিরোধী কক্ষেও প্রাণ বাঁচছে অনেকের। শুক্রবার রাত থেকে ইরানের টানা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতের সময় তেল আবিব, রামাত গান ও রিশোন লেজিওন শহরে কয়েকটি বহুতল ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, যেসব নাগরিক আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন, তারা বড় ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছেন। নিহত তিনজনেরই বাড়িতে শেল্টার ছিল না কিংবা তারা সেখানে ছিলেন না।
ইসরায়েলি বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, ইরানের চার ধাপের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় প্রায় ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। তবে যেগুলো জনবসতিহীন এলাকায় পড়ার সম্ভাবনা ছিল, সেগুলোকে ইচ্ছাকৃতভাবে প্রতিরোধ করা হয়নি। তবুও অল্পসংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র রাডার ফাঁকি দিয়ে আঘাত হেনেছে। এ হামলায় তিন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন এবং আহত হন ৮০ জনের বেশি। সাত সেনাও সামান্য আহত হয়েছেন।
আক্রমণের আগাম বার্তার পাশাপাশি ইসরায়েলজুড়ে কার্যকর রাখা হয়েছে সাইরেন ব্যবস্থা। ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতের প্রায় ৯০ সেকেন্ড আগে সাইরেন বাজানো হয়, যাতে মানুষ দ্রুত আশ্রয় নিতে পারেন। হোম ফ্রন্ট কমান্ডের তদারকিতে রোববার পর্যন্ত জরুরি অবস্থা বহাল ছিল। স্কুল ও কর্মস্থল বন্ধ রাখা হয়, শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবা চালু ছিল।
এছাড়া প্রতিরক্ষার অংশ হিসেবে রিজার্ভ সেনাদের তলব এবং হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করেছে ইসরায়েল। তবে প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে শনিবার ভোরের এক দফা হামলার সময় রিশোন লেজিওনে আগাম বার্তা যায়নি। বিষয়টি তদন্ত শেষে সংশোধন করা হয়েছে।
সব মিলিয়ে, আধুনিক প্রযুক্তি, আগাম সতর্কতা এবং সুসংগঠিত নাগরিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই ইসরায়েলকে প্রাণহানির বড় ধরনের ধাক্কা থেকে অনেকটাই রক্ষা করছে। তবে সামরিক বাহিনী এখনো সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে।