
কোরবানির ঈদ মানেই মাংসের নানা পদ রান্নার ধুম, আর এর অন্যতম উপকরণ হলো নানা রকম মসলা। ঈদের সময়ে এসব মসলার চাহিদা যেমন বাড়ে, তেমনি দামও চড়া হয়ে ওঠে অনেক জায়গায়। তবে একটু সচেতন হলে মসলায় সাশ্রয় সম্ভব—তাও আবার কেজিতে ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১,২০০ টাকা পর্যন্ত।
রাজধানীর বড় পাইকারি বাজার মৌলভীবাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এখান থেকে মসলা কিনলে পাড়া–মহল্লার দোকানের তুলনায় অনেক কম দাম পড়ে। মৌলভীবাজারের ছোট দোকানগুলোতেও খুচরা দামে প্রায় পাইকারি হারে মসলা পাওয়া যায়, যা সাধারণ মানুষের জন্য বড় সুযোগ।
উদাহরণস্বরূপ, শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা আহসানউল্লাহ মৌলভীবাজার থেকে ২৫০ গ্রাম করে ছয় ধরনের মসলা (যেমন সাদা এলাচি, কালো এলাচি, লবঙ্গ, ধনে, স্টার ফল ও গোলমরিচ) কিনেছেন ২,৮০০ টাকায়। অথচ একই পরিমাণ মসলা পাড়া-মহল্লার দোকানে কিনতে গেলে খরচ হতো ৫,২০০ টাকা—অর্থাৎ একাই ২,৪০০ টাকার সাশ্রয়!
বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এলাচের ক্ষেত্রে পার্থক্য সবচেয়ে বেশি। মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারে কেজি প্রতি এলাচ বিক্রি হয় ৫,০০০–৫,৫০০ টাকায়, যেখানে মৌলভীবাজারে তা ৪,৩০০–৪,৮০০ টাকা। জয়ত্রীর ক্ষেত্রেও আছে ৫০০–৭০০ টাকার পার্থক্য। একইভাবে জিরা, দারুচিনি, লবঙ্গ, ধনে, তেজপাতা থেকে শুরু করে কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, কিশমিশ, আলুবোখারার মতো ড্রাই ফ্রুটসেও বড় ধরনের সাশ্রয় সম্ভব।
যেমন, মৌলভীবাজারে কিশমিশে কেজিতে ৫০–১০০ টাকা, কাঠবাদামে ১০০ টাকা, আর কাজুবাদামে ১০৫–৩০০ টাকা পর্যন্ত কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে যাঁদের পরিবারের সদস্য বেশি বা যাঁরা বড় আকারে রান্না করেন, তাঁদের জন্য এই সাশ্রয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি ব্যবসায়ীরা চাইলে পাইকারি দরেও এখান থেকে মসলা কিনতে পারেন, যা আরও কম খরচে পড়ে।
মৌলভীবাজারের বাদশা স্টোরের বিক্রেতা মো. বাদশা মিয়া জানান, ‘আমরা খুচরা ও পাইকারি দুইভাবেই বিক্রি করি। তাই আশপাশের জেলা তো বটেই, দেশের নানা জায়গা থেকেও ক্রেতারা আমাদের বাজারে আসেন। কারণ এখানে গুণগত মান ঠিক রেখে কম দামে মসলা কিনতে পারছেন সবাই।’
সুতরাং, কোরবানির ঈদে খরচ বাঁচাতে চাইলে একবার ঘুরে আসতে পারেন মৌলভীবাজার বা কারওয়ান বাজার থেকে। দাম কম, মান ভালো—ঈদের রান্নাও জমবে আরও বেশি!