
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের সব ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন ইশরাক হোসেনের সমর্থকেরা। এতে পুরো নগর ভবনের সেবা কার্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে। শনিবার সকাল ৯টার দিকে এই তালা লাগানোর ঘটনাটি ঘটে। বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, তাঁরা নগর ভবনের ৬৫টি ফটকে তালা লাগিয়েছেন। ফলে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কেউই ভেতরে প্রবেশ করতে পারছেন না।
এই কর্মসূচি ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে আয়োজন করা হয়। ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব না দেওয়ার প্রতিবাদেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে বিক্ষোভকারীরা জানান। বিক্ষোভকারীরা আরও জানান, বৃহস্পতিবারও একইভাবে তালা দিয়ে নগর ভবনের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছিলেন তাঁরা।
আজও বেলা ১১টা পর্যন্ত নগর ভবনের সামনে অবস্থান করে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। পরে সচিবালয়ের দিকে মিছিল নিয়ে গেলেও পুলিশের ব্যারিকেডে আটকা পড়ে মিছিলটি। বেলা দেড়টার দিকে পরবর্তী দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে আজকের কর্মসূচি শেষ করা হয়। আগামীকাল রোববারও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
তালার কারণে শুধু নগর ভবন নয়, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয়ের সেবা কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে গেছে। এক নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, আঞ্চলিক অফিসগুলোতেও আন্দোলনকারীরা প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছেন।
সাধারণ নাগরিকদের ভোগান্তির চিত্রও স্পষ্ট। জুরাইন থেকে বাবার মৃত্যু সনদ নিতে আসা নাসরিন বেগম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার এসেও সনদ নিতে পারিনি। আজকেও তালা ঝুলছে। আমি এখন কী করব?’ একইভাবে গুলশান থেকে নগর ভবনে আসা শাওন আহমেদ বলেন, ‘আমরা সাধারণ মানুষ, আমাদের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। দ্রুত সমাধান চাই।’
আন্দোলনকারীরা স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এবং তাঁর সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদীকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেন এবং যেখানেই পাওয়া যাবে, সেখানেই প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দেন।
উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল আদালতের রায় অনুযায়ী ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তবে এখন পর্যন্ত তাঁকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। এ নিয়েই চলছে এই বিক্ষোভ ও অচলাবস্থা। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার আইন ও বিচার বিভাগে চিঠি দিয়ে ইশরাকের দায়িত্ব গ্রহণে কোনো আইনি জটিলতা রয়েছে কি না, তা জানতে চেয়েছে।
বিক্ষোভের পাশাপাশি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এই কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করছেন। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক না হলে নাগরিক সেবা আরও দীর্ঘ সময়ের জন্য ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।