
হাত–পা ঝিনঝিন করা বা অবশ হয়ে যাওয়ার অনুভূতি অনেকের কাছে পরিচিত সমস্যা। কারও মনে হয় পিন দিয়ে খোঁচানো হচ্ছে, কারও পায়ের তালু জ্বলে, আবার কারও ঘুম হারাম হয়ে যায় পা কামড়ানো বা অবশ হয়ে যাওয়ার কারণে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এই সমস্যার নাম ‘পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি’, যার মানে হলো শরীরের প্রান্তীয় স্নায়ুতে সমস্যা। সাধারণত হাতের চেয়ে পায়ে এই রোগের উপসর্গ বেশি দেখা যায়, বিশেষত পায়ের তলানিতে।
কেন হয় এই সমস্যা?
বিভিন্ন কারণে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি হতে পারে। সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলো হলো—
-
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস,
-
থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা,
-
কিডনি রোগ,
-
কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া,
-
ভিটামিন ঘাটতি।
লক্ষণগুলো কী রকম?
হাত-পায়ে ঝিনঝিন, খোঁচাখুঁচির অনুভূতি, অবশ হয়ে যাওয়া, জ্বালা বা ব্যথা, অনুভূতি কমে যাওয়া কিংবা হাত-পায়ের শক্তি কমে যাওয়া—এসবই নিউরোপ্যাথির লক্ষণ। কারও কারও ক্ষেত্রে স্যান্ডেল পড়ে থাকলেও বোঝেন না।
কীভাবে নির্ণয় হয়?
রোগীর ইতিহাস ও শারীরিক পরীক্ষা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ডায়াবেটিস, থাইরয়েড, কিডনির অবস্থা যাচাই করা দরকার। প্রয়োজনে ‘নার্ভ কন্ডাকশন টেস্ট’ করা হতে পারে।
চিকিৎসা কী?
প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে কোনো ওষুধের কারণে রোগটি হচ্ছে কি না। ডায়াবেটিস থাকলে তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। থাইরয়েড বা ভিটামিনের ঘাটতি থাকলে সেগুলোর চিকিৎসা জরুরি। বিশেষ কিছু ওষুধ—যেমন প্রিগাবালিন বা অ্যামিট্রিপটাইলিন—ব্যবহার করলে উপশম মেলে। তবে এসব ওষুধ দীর্ঘদিন সেবন করতে হতে পারে।
সঠিক কারণ নির্ণয় ও চিকিৎসার মাধ্যমে এই অস্বস্তিকর সমস্যার সমাধান সম্ভব। তাই অবহেলা না করে প্রয়োজনে নিউরোলজি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।