
দাম না বাড়িয়ে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে শুল্ক ও কর হ্রাসের মাধ্যমে ২০২৫–২৬ অর্থবছরে ১১ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয়ের পরিকল্পনা করেছে সরকার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে ভর্তুকি কমাতে উৎপাদন খরচ ১০ শতাংশ কমানো হবে। এর মাধ্যমে বছরে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয়ের আশা করা হচ্ছে।
পেট্রোবাংলার লোকসান কমাতে এলএনজি আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার এবং গ্যাস বিতরণ সংস্থার উৎসে কর ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.৬ শতাংশ করা হয়েছে। এতে তাদের খরচ কমে আসবে এবং তিতাস-বাখরাবাদের মতো কোম্পানি লাভে ফেরার সম্ভাবনা তৈরি হবে।
বিদ্যুৎ খাতে উৎসে কর ৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশ করায় পিডিবির খরচ বছরে ১,২০০ কোটি টাকা কমতে পারে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির দাবি ছিল, উৎসে কর পুরোপুরি বাতিল করা গেলে তা ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি সাশ্রয় আনতে পারত।
জ্বালানি খাতেও বড় পরিবর্তন এসেছে। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে ১ শতাংশ এবং পরিশোধিত জ্বালানি তেলের শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। এতে বেসরকারি খাতে আমদানি খরচ কমবে, যদিও বিপিসির ব্যয়ের তেমন পরিবর্তন হবে না।
এবার বাজেটে জ্বালানি খাতের বরাদ্দ দ্বিগুণ করে ২,১৭৮ কোটি টাকা করা হয়েছে, যেখানে বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ কমিয়ে ২০,৩৪২ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে।
ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম বলেন, “বিদ্যুতের দাম না বাড়ানো এবং এলএনজির শুল্ক প্রত্যাহার ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে জ্বালানিতে সুবিচার ও প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বাজেটে আরও স্পষ্ট দিকনির্দেশনা প্রয়োজন ছিল।”
সব মিলিয়ে এবারের বাজেটে সরকার খরচ কমিয়ে চাপ হালকা করতে চাইলেও, বাস্তবায়ন কার্যকারিতার ওপরই নির্ভর করবে পরিকল্পনার সফলতা।