
বিদেশফেরত যাত্রীদের জন্য সোনা ও মোবাইল আনার নিয়মে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে সরকার। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার পরদিন জারি করা নতুন ব্যাগেজ বিধিমালায় সোনা, গয়না ও মোবাইলের ক্ষেত্রে কড়া শর্ত আরোপ করা হয়েছে। লক্ষ্য—সোনা পাচার ও অপব্যবহার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
নতুন বিধিমালায় বলা হয়েছে, এখন থেকে একজন যাত্রী বছরে মাত্র একবারই শুল্ক দিয়ে একটি সোনার বার আনতে পারবেন। এর আগে প্রতিবার একজন যাত্রী ১১৭ গ্রাম ওজনের একটি বার আনতে পারতেন। একই সঙ্গে সোনার ওপর শুল্কও বাড়ানো হয়েছে—আগে যেখানে প্রতি ভরিতে (১১.৬৬৪ গ্রাম) ৪ হাজার টাকা শুল্ক দিতে হতো, এখন তা বাড়িয়ে ৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। ফলে একটি সোনার বারের জন্য শুল্ক দাঁড়াচ্ছে ৫০ হাজার টাকা।
সোনার গয়নার ক্ষেত্রেও এসেছে কড়াকড়ি। আগে বারবার ১০০ গ্রাম গয়না বিনা শুল্কে আনার সুযোগ থাকলেও এখন একজন যাত্রী বছরে একবারই এই সুবিধা পাবেন।
মুঠোফোন আনার ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ জোরালো করা হয়েছে। এখন থেকে বিদেশফেরত যাত্রীরা শুধু দুটি ব্যবহৃত মুঠোফোন এবং বছরে মাত্র একবার একটি নতুন ফোন আনতে পারবেন শুল্ক ও কর ছাড়া। পূর্বের বিধিতে প্রতিবার একটি নতুন ফোন শুল্ক দিয়ে আনা যেত।
এই পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে গত পাঁচ বছরে বিপুল পরিমাণ সোনা আমদানির অভিজ্ঞতা। বিভিন্ন সুবিধার সুযোগ নিয়ে যাত্রীরা পাঁচ বছরে বিমানবন্দর দিয়ে আনেন প্রায় ১৪২ টন সোনা, যার একটি বড় অংশ পরবর্তীতে পাচার হয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ফলে সরকার এবার বিধিমালায় কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়েছে।
নতুন বিধিমালায় আরও বলা হয়েছে, নির্ধারিত সীমার বেশি পণ্য আনলে শুল্ক-কর পরিশোধের পাশাপাশি অর্থদণ্ড, জরিমানা এবং বিশেষ ছাড়পত্রের প্রয়োজন হতে পারে। আমদানি নিয়ন্ত্রিত বা নিষিদ্ধ পণ্যের ক্ষেত্রে এসব সুবিধা প্রযোজ্য নয়।
তবে বিধিমালায় একটি শিথিলতাও রাখা হয়েছে। আগে কেউ ভুলক্রমে ব্যাগেজ ঘোষণা না করলে আগমনের সাত দিনের মধ্যে তা সংশোধনের সুযোগ থাকত। এখন সেটি বাড়িয়ে ৩০ দিন করা হয়েছে। ফলে কিছুটা সময়সীমা ছাড় পেলেও সার্বিকভাবে নতুন নিয়মে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার দিকেই জোর দেওয়া হয়েছে।