ঢাকা   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

অবাস্তব রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ও কাঠামোগত ঘাটতিতে হতাশ আইবিএফবি

অবাস্তব রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ও কাঠামোগত ঘাটতিতে হতাশ আইবিএফবি

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে বাস্তবভিত্তিক না বলে সমালোচনা করেছে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি)। সংগঠনটি বলেছে, বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পরিকল্পনা নেই, কাঠামোগত সংস্কারের অভাব রয়েছে এবং রাজস্ব আদায়ের যে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অবাস্তব। কার্যকর কর সংস্কার ছাড়া এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছে তারা।

আইবিএফবি আরও বলেছে, প্রস্তাবিত বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রাখার ফলে সৎ করদাতারা অবহেলিত হচ্ছেন, যা আর্থিক শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করবে। একইসঙ্গে বাজেট প্রস্তাবে কর প্রশাসন সংস্কার, ঋণ ব্যবস্থাপনার টেকসইকরণ ও সরকারি ব্যয় নিয়ন্ত্রণের বিষয়েও কোনও দিকনির্দেশনা নেই। ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ, সুদহার সমস্যা এবং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপও অনুপস্থিত।

বেসরকারি খাতকে বাজেটে উপেক্ষিত বলেও অভিযোগ করেছে সংগঠনটি। তাদের মতে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা, রপ্তানিকারক এবং স্টার্টআপদের জন্য বাজেটে কার্যকর প্রণোদনা নেই। গবেষণা, কারিগরি প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল রূপান্তর এবং সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে বরাদ্দও অপ্রতুল।

আইবিএফবি বাজেট সংশোধনের সুপারিশ করে বলেছে, রাজস্ব আদায়ে ডিজিটাল পদ্ধতি ও ন্যায্য করনীতি নিশ্চিত করতে হবে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ, স্বচ্ছ প্রণোদনা প্যাকেজ, ব্যাংক খাতে সুশাসন ও কম সুদে ঋণ সহজলভ্য করাসহ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম কার্যকরভাবে পৌঁছে দিতে হবে। তারা সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা, ভর্তুকির যৌক্তিকীকরণ এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে জবাবদিহিতার ওপরও জোর দিয়েছে।

তবে প্রস্তাবিত বাজেটের কিছু ইতিবাচক দিকও তুলে ধরেছে আইবিএফবি। যেমন—২০২৬-২৭ অর্থবছরে করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধির ঘোষণা, কম আয়ের মানুষের জন্য স্বস্তির বিষয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। জুলাই যোদ্ধাদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা করাকে সম্মানজনক পদক্ষেপ বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এক হাজার কোটি টাকার তহবিলকে অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তির জন্য উৎসাহব্যঞ্জক বলে আখ্যা দিয়েছে আইবিএফবি। এছাড়া কাঁচামাল ও ওষুধে শুল্ক হ্রাস, পরিবেশবান্ধব উদ্যোগে ই-বাইকে প্রণোদনা, ই-কমার্স খাতে কর ও নিয়ন্ত্রণ এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে (পিপিপি) ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দকে ইতিবাচক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে সংগঠনটি।