ঢাকা   বুধবার ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২

অবৈধ রাসায়নিক গুদামকে তিনবার নোটিশ দিয়েছিল ফায়ার সার্ভিস

গ্রামবাংলা

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২০:১৩, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

অবৈধ রাসায়নিক গুদামকে তিনবার নোটিশ দিয়েছিল ফায়ার সার্ভিস

ফায়ার সার্ভিসের তৈরি করা অবৈধ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে আগুনে পুড়ে যাওয়া রাসায়নিক গুদাম আলম ট্রেডার্সও ছিল বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ডে মেইটেন্যান্স) লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম। আজ বুধবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।

তাজুল ইসলাম আরও জানান, সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে বিষয়টি জানানোর পাশাপাশি তিনবার ওই গুদামে নোটিশও দেওয়া হয়েছিল। এখন ওই গুদাম অভিযান চালানোর পর্যায়ে ছিল।


গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগে। এই আগুন বিস্ফোরিত হয়ে পাশের চারতলা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। ভবনটির দোতলায় স্মার্ট প্রিন্টিং নামের একটি কারখানায় টি-শার্ট প্রিন্ট করা হয়। আর তিন ও চারতলায় আরএন ফ্যাশন নামের একটি পোশাক কারখানা আছে। পরে চারতলা ভবনের দোতলা ও তিনতলার বিভিন্ন স্থান থেকে ১৬টি লাশ উদ্ধার করা হয়। ১০ জনের মরদেহ শনাক্তের দাবি করেছেন স্বজনেরা।

রাসায়নিকের তেজস্ক্রিয়তার কারণে গুদামে এখনো সার্চ অপারেশন চালানো যায়নি বলেও জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আরও ৩৬ থেকে ৭২ ঘণ্টা লাগতে পারে। এখন রাসায়নিক দ্রব্যগুলো পানি ছিটিয়ে অপসারণ করা হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ডে মেইটেন্যান্স) লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা গতকাল ১১টা ৪০ মিনিট থেকে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেছি। এই পর্যন্ত অগ্রগতি হচ্ছে গতকালকেই গার্মেন্টস অংশের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। পাশে যে কেমিক্যালের গোডাউন, যেটা আলম ট্রেডারস নামে পরিচিত, সেই গোডাউনের আগুন আমরা আজ বেলা ২টা ২০ মিনিটে নিয়ন্ত্রণে আনার ঘোষণা করেছি।’

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, তবে এখানে বেশ কিছু বিষয় রয়েছে। এটা একটা রাসায়নিক গুদাম এবং এখানে ছয়-সাত ধরনের বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য রয়েছে। তবে কী ধরনের রাসায়নিক বা এগুলোর মাত্রা কী, তা এখনো যাচাই–বাছাই করা যায়নি। পুরো গুদাম বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্যে ভরা। পানি ছিটিয়ে এসব রাসায়নিক পরিষ্কার করা হচ্ছে। কাজটি সময় সাপেক্ষ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সিস্টেমেটিক কাজ করছি। টেকনোলজি অ্যাপ্লাই করছি। ড্রোন দিয়ে দেখছি এবং আমরা বোঝার চেষ্টা করছি।’

আলম ট্রেডার্সের ভবনটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, গুদাম অনেকাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লম্বা সময় ধরে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে এই ভবনের পিলারগুলো অনেকাংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে রাজউক, ভবন বিশারদ, যাঁরা দায়িত্বশীল ব্যক্তি রয়েছেন, তাঁরাই বলতে পারবেন যে কতটুকু ক্ষতি হয়েছে। এখানে যেকোনো অভিযান চালানো ঝুঁকিপূর্ণ। এই ঝুঁকি এড়াতে নিরাপত্তার সঙ্গে ধাপে ধাপে কাজ করা হচ্ছে।

ভেতরের অবস্থার বিষয়ে তাজুল ইসলাম জানান, আলম ট্রেডার্সের মূল দরজায় তালা মারা ছিল। হাইড্রলিক স্প্রেডার ও কাটার দিয়ে এটাকে কেটে তারপর খুলতে হয়েছে। সুতরাং ধারণা করা হচ্ছে যে এখানে হয়তো মানুষ ছিল না। তারপরও সার্চ অপারেশন না চালানো পর্যন্ত বলা যাবে না, এখানে মানুষ ছিলেন কি ছিলেন না।