
সারাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি হঠাৎ করেই নতুন মোড় নিয়েছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার সকাল থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৮৮ জন রোগী, যা সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে এক দিনে সর্বোচ্চ। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, আক্রান্তদের মধ্যে ২০২ জনই বরগুনা জেলার বাসিন্দা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এক দিন আগেও ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ৩৮ জন। অর্থাৎ এক দিনের ব্যবধানে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় সাত গুণ। যদিও এ সময়ে কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি, তবে রোগীর সংখ্যা হঠাৎ এভাবে বেড়ে যাওয়া জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের চিন্তিত করে তুলেছে।
বিভাগীয়ভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে শনাক্ত হয়েছে ২৬১ জন ডেঙ্গু রোগী, যার মধ্যে বরগুনা জেলাতেই ২০২ জন। অর্থাৎ মোট আক্রান্তের ৭০ শতাংশের বেশি রোগী শুধু একটি জেলার।
এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক হালিমুর রশীদ বলেন, “ঈদের ছুটির কারণে পরীক্ষা কম হয়েছিল, এখন পরীক্ষা বাড়ায় রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে।” একই সঙ্গে জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. মুশতাক হোসেনও মনে করেন, ছুটির সময় জমে থাকা রোগীর সংখ্যা এখন প্রকাশ পাচ্ছে। তবে বাস্তবিকভাবে সংক্রমণ বেড়েছে কি না, তা বোঝা যাবে আরও কয়েক দিনের মধ্যে।
পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবনে জানা যায়, এখন পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩০৩ জনে। এর মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশই ঢাকার বাইরে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত বরিশাল বিভাগে, এবং এককভাবে সর্বোচ্চ সংক্রমণের হার বরগুনা জেলায়। এই একটি জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৪০৬ জন, যা দেশের মোট রোগীর প্রায় ২৬.5 শতাংশ।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এখনই জরুরি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা জোরদার করা না হলে বরগুনা থেকে ছড়িয়ে পড়তে পারে অন্যান্য জেলাতেও— এমন আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। অতএব স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকে আরও তৎপর হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন জনস্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা।