
৯ মাস আগে অভ্যুত্থানে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিস্তব্ধ হয়েছিল ৭ বছরের ছোট্ট মুসা। মুখ থেকে হারিয়ে গিয়েছিল সব শব্দ—হারিয়ে গিয়েছিল প্রিয় “মা” ডাকটিও। সেই নিস্তব্ধতা ভেঙে অবশেষে ১ মে সকাল ৮টায় চিকিৎসার সময় হঠাৎই মায়ের মুখে “মাম্মি” বলে ডেকে ওঠে মুসা। মা নিশামনি আবেগে কাঁদেন, বলেন—“এই ডাকে আমার মন ভরে না। বারবার শুনতেও থামে না কান।”
গত বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর রামপুরায় গুলিতে আহত হয়েছিল মুসা ও তার দাদি। দাদি মায়া ইসলাম মারা যান পরদিনই। সংকটাপন্ন মুসাকে নেয়া হয় সিএমএইচ হয়ে সিঙ্গাপুরে। টানা ২০টির বেশি অস্ত্রোপচার, দীর্ঘ সময় আইসিইউ, কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস—সবই পেরিয়ে এখন ধীরে ধীরে সুস্থতার পথে মুসা।
সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে এখনও সিএমএইচেই চিকিৎসাধীন। এখন সে ব্যথার অনুভব প্রকাশ করতে পারে, কিছু শব্দ বলতে পারে। “মাম্মি”, “বাবা”, “আন্টি”—এই ডাকগুলো ফিরে আসছে ধীরে ধীরে। পক্ষাঘাতগ্রস্ত ডান পাশে এখনও জটিলতা থাকলেও চিকিৎসকেরা আশাবাদী—মুসা একদিন আবার হাঁটবে, কথা বলবে, এমনকি পড়ালেখাও চালিয়ে যাবে।
নিশামনি জানান, মুসা আবার পড়ায় আগ্রহ দেখাচ্ছে, “জনি জনি ইয়েস পাপা” ছড়া বলতে পারে, অ থেকে ঔ পড়তে পারে। মায়ের প্রত্যাশা—আগের মতো আবার দৌড়ে এসে “মাম্মি” বলে জড়িয়ে ধরুক তার ছেলে, আগের মতো বারবার ডাক দিয়ে বিরক্ত করুক। মা দিবসের ঠিক আগের দিনে সেই “মা” ডাক ফিরে পাওয়াই যেন এক অলৌকিক উপহার।
এই গল্প শুধু এক শিশুর পুনর্জন্ম নয়, এটি এক মায়ের প্রতীক্ষা, ভালোবাসা আর শক্তিরও প্রতিচ্ছবি।