
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল) ২০২৪ সালে শেয়ারপ্রতি ৮৯ পয়সা লোকসানে গেছে। সমন্বিতভাবে ১০১ কোটি টাকার ক্ষতির কারণে শেয়ারধারীদের জন্য কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি ব্যাংকটি। এটি ব্যাংকটির সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় আর্থিক বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দেয়।
ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার এসআইবিএলের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে ২০২৪ হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর এই লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অথচ আগের বছর ব্যাংকটি ২১২ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল এবং শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ১ টাকা ৮৬ পয়সা।
আর্থিক প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ২০২৪ সালে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ (ক্যাশ ফ্লো) ছিল মাইনাস ৭ টাকা ৫১ পয়সা, যেখানে আগের বছর তা ছিল ৭ টাকা ৯০ পয়সা। তবে ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ২০২৪ সালের শেষে দাঁড়িয়েছে ১৮ টাকা ১৫ পয়সায়।
দীর্ঘদিন চট্টগ্রামের এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা এসআইবিএল বর্তমানে সে প্রভাবমুক্ত হলেও পূর্বের অনিয়ম ও বিতর্কিত লেনদেন এখনো ব্যাংকের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর গ্রুপটির ঘনিষ্ঠজনদের নেতৃত্বে ব্যাংক থেকে নামে–বেনামে বিপুল অর্থ উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে। এর ফলে ব্যাংকটির প্রায় ১৩ হাজার ২৬৭ কোটি টাকার (৩৪ শতাংশ) ঋণ অনাদায়ী অবস্থায় রয়েছে। ফলাফলস্বরূপ আয় থাকলেও ব্যয় আরও বেশি, যার রেশ গিয়ে ঠেকেছে বিশাল লোকসানে।
এই পরিস্থিতিতে ২০২৪ সালের জন্য ব্যাংকটি কোনো লভ্যাংশ দেবে না বলে জানিয়েছে। তবে ব্যাংকটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আগামী ১৮ আগস্ট সকাল ১১টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হবে। এজিএমের জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ জুন।
এই আর্থিক চাপ ও ক্ষতির প্রেক্ষিতে এসআইবিএলের সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ব্যাংকটির আস্থা পুনরুদ্ধার ও ঋণ আদায় কার্যক্রমে গতিশীলতা আনা।